UG CC-SO-01 SAMPL NOTE

MM INSTITUTION

👇DOWNLOAD UG SAMPLENOTE (CC-SO-01) 👇

প্রশ্ন: সমাজ প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব লেখ ?

          ANS.   প্রতিষ্ঠানসমূহ মানবসমাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। মানবসমাজে সাংগঠনিক ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানসমূহের ভূমিকা বহুবিধ ও তাৎপর্যপূর্ণ। ব্যক্তিজীবনের আচার আচরণ এবং সমগ্র সমাজের কার্যধারাকে একটি সুসংহত ও সুশৃঙ্গাল রূপ প্রদান করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সামাজিক প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যকরী অবদানকে অস্বীকার করা যায় না। সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলি হল সমাজজীবনের কার্য সম্পাদনের অপরিহার্য মাধ্যম। এগুলি সমাজজীবনের কার্যনির্বাহের ক্ষেত্রে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মতই প্রয়োজনীয়। নিরবচ্ছিন্নভাবে বহমান এই মানবসমাজের ধারাকে প্রতিষ্ঠানগুলিই নির্দিষ্ট পথে নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত করে। শুধু তাই নয় সমাজের স্থায়িত্ব বিধানের ক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠানগুলির ভূমিকা বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। প্রকৃতপ্রস্তাবে মানব সমাজে প্রতিষ্ঠান সমূহের গুরুত্ব বহু ও বিভিন্ন। সমাজজীবনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানগুলির গুরুত্বকে নিম্নলিখিতভাবে ব্যক্ত করা যায় ।

ক) সামাজিক নিয়ন্ত্রণ :- সমাজব্যবস্থার মধ্যে তমান সামাজিক প্রতিষ্ঠানসমূহ সামাজিক নিয়ন্ত্রণের অন্যতম মাধ্যম হিসাবে ভূমিকা পালন করে। সমাজে বসবসাকারী ব্যক্তিবর্গ এই সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে নির্দ্বিধায় এবং অত্যন্ত সহজভাবে গ্রহণ করে। সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলির নির্দিষ্ট কার্যপদ্ধতি থাকে। এবং তার মাধ্যমে আচার-আচরণের স্থিতিশীলতা বজায় থাকে। প্রাতিষ্ঠানিক এই সমস্ত নিয়ম-নীতি সমাজস্থ ব্যক্তিবর্গের অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায় এবং এইভাবে অপেক্ষাকৃত সহজে সামাজিক নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি সম্পাদিত হয়। সামাজিক আচার-আচরণ সম্পর্কিত এই সমস্ত পন্থা- পদ্ধতি সংশ্লিষ্ট সংকট মোচনের ক্ষেত্রেও সাহায্য করে থাকে। যেমন, বিবাহ হল একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। এই বিবাহ ব্যবস্থা ব্যতিরেকে সমাজে নৈরাজ্য সৃষ্টি হওয়ার আশা থাকে। এই আশক্ষা একেবারে অমূলক নয় ।

খ) ব্যক্তির ভূমিকা নির্ধারণ: সমাজজীবনের ভূমিকা কি হবে তা নির্ধারণের ক্ষেত্রে সামাজিক প্রতিষ্ঠানসমূহের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। জীবনের বিভিন্ন অবস্থার আচার-আচরণ অভিন্ন রকমের হয় না । ব্যক্তিজীবনের পর্যায়ভেদে আচার-আচরণ বিভিন্ন ধরনে থাকে। কিন্তু মানবজীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যক্তি যাতে বিভিন্ন আচার আচরণ অনুসরণ করে সেই উদ্দেশ্যে সমাজের প্রচলিত প্রতিষ্ঠানসমূহ কার্যপদ্ধতির মাধ্যমে অভিন্ন আচরণ পদ্ধতি সমাজস্থ ব্যক্তিবর্গের সামনে তুলে ধরে। এই ভাবে ব্যক্তির আচার-আচরণ পদ্ধতি সমাজস্থ ব্যক্তিবর্গের সামনে তুলে ধরে। এইভাবে ব্যক্তির আচার-আচরম নির্দিষ্ট আকার লাভ করে এবং কার্যপদ্ধতি সুনির্দিষ্ট পথে পরিচালিত হয়। এবং এইভাবে ব্যক্তির কার্যপদ্ধতি ও আচার আচরণ স্বতঃস্ফূর্ত ও সুশৃঙ্খল হয়। সৌভ্রাতৃত্বপূর্ণ করে তোলে। এই প্রতিষ্ঠানগুলি সমাজস্থ

গ) নৈতিকতা ও সৌজন্য সংরক্ষণ :- সামাজিক প্রতিষ্ঠানসমূহ সামাজিক পরিমন্ডলকে সুস্থ ও ব্যক্তিবর্গের মধ্যে সৌজন্যবোধের সৃষ্টি করে এবং তাদের মধ্যে সামাজিকতা সঞ্চারিত করে। তা ছাড়া গোষ্ঠীজীবনের নৈতিকতা সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সামাজিক প্রতিষ্ঠানসহ সহায়ক ভূমিকা পালন করে। 

ঘ) ব্যক্তি মানুষ যাতে সঠিক :  পথে তার জীবনকে পরিচালিত করতে পারে সেই উদ্দেশ্যে সামাজিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করে। সমাজের মধ্যে এই সমস্ত প্রতিষ্ঠানের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। 

ঙ) সামাজিক প্রতিষ্ঠানসমূহ গোষ্ঠীজীবনের ব্যক্তির আচার-আচরণকে সহজ ও স্বাচ্ছন্দ করে তোলে। ব্যক্তির সামাজিক আচার-আচরণ এই সমস্ত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জটিল হয়। 

          চ) সমাজের স্থায়িত্ব ও অগ্রগতি : মানবসমাজের স্থায়িত্ব সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও সামাজিক প্রতিষ্ঠানসমূহের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সমাজের প্রচলিত বিধি-নিয়ম এ ক্ষেত্রেও ইতিবাচক ও কার্যকর ভূমিকা পালন করে। আবার মানবসমাজের অগ্রগতিকে অব্যাহত রাখার ব্যাপারেও সামাজিক প্রতিষ্ঠানসমূহের ভূমিকার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। প্রচলিত প্রতিষ্ঠানসমূহের এই ভূমিকার ফলে সমাজের রক্ষণশীলতা দূরীভূত হয় এবং মানবসমাজ গতিশীল ও প্রাণবন্ত হয়।

◉ উপসংহারঃ আবার সামাজিক প্রতিষ্ঠানসমূহ অনেক সময় ব্যক্তিবর্গের স্বাধীনতার পরিপন্থী প্রতিপন্ন হয়। অর্থাৎ ক্ষেত্রবিশেষে এই সমস্ত প্রতিষ্ঠান ব্যক্তির স্বাধীন আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে। কোন কোন সামাজিক প্রতিষ্ঠান অত্যন্ত কঠোর ও পীড়নমূলক প্রতীয়মান হয়। এই সমস্ত সামাজিক প্রতিষ্ঠান ব্যক্তির আচার-আচরণের উপর অতিনিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। তার ফলে ব্যক্তির আত্মবিকাশের পথে অন্তরায়ের সৃষ্টি হয়। তবে সামাজিক প্রতিষ্ঠানসমূহ সম্পর্কে এ ধরনের বিরূপ সমালোচনা সাধারণভাবে বা স্বাভাবিক অবস্থায় প্রাসঙ্গিক বা প্রযোজ্য নয়। কিন্তু অনেক সময় কোন কোন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা বিশেষভাবে পীড়নমূলক প্রতিপন্ন হয়। পীড়নমূলক প্রকৃতির প্রতিষ্ঠানসমূহের বিরুদ্ধে সমাজস্থ ব্যক্তির্ণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হতে পারে এবং বাস্তবে হয়ও। কিন্তু সমাজতত্ত্বের আলোচনায় সামাজিক প্রতিষ্ঠানসমূহের এই দিকটির উপর তেমন গুরুত্ব আরোপ করা হয় না ।

প্রশ্ন : সংঘ ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সম্পর্ক লেখ

   ANS.      উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক গভীর : সংঘ ও প্রতিষ্ঠান পরস্পরের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। এই দুটির একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটির অস্তিত্ব অসম্ভব। অর্থাৎ একটি সংঘ আছে অথচ তার প্রতিষ্ঠান নেই এমন হতে পারে না। আবার প্রতিষ্ঠানও সংঘ ব্যতিরেকে সৃষ্টি হয় না । বস্তুত একটি সংগঠনের মধ্যেই প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টিও অস্তিত্ব সম্ভব। সমাজে ব্যক্তির প্রয়োজনে সংঘ গড়ে ওঠে। সমাজস্থ ব্যক্তিবর্গ সৃষ্টি করে সংঘ। এই সংঘ পরিচালনার জন্য ন হল কতকগুলি বিধি-নিয়ম বা কার্যপদ্ধতির। এই সমস্ত নিয়ম ও কার্যপদ্ধতির মাধ্যমে সংঘের কাজকর্ম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদিত হয় এবং সংঘের সদস্যদের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ন্ত্রিত হয়। এই সমস্ত নিয়ম বা কার্যপদ্ধতি হল প্রতিষ্ঠান। সুতরাং সংঘ এবং প্রতিষ্ঠানকে পরস্পর থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ক বস্তুত প্রতিষ্ঠানের অপরিহার্যতা প্রতিটি সাথের ক্ষেত্রেই অনস্বীকার্য। সামাজিক ব্যবস্থায় ব্যক্তি জীবন ও গোষ্ঠী জীবনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত অপরিহার্য এবং সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ।

● সংঘ ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্য : সংঘ ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। এতদত্ত্বেও উভয়ের মধ্যে পার্থক্য আছে। এবং এই পার্থক্য প্রসঙ্গে আলোচনা করা আবশ্যক। সং ও প্রতিষ্ঠান’ শব্দ দুটির অর্থ প্রসঙ্গে বিভ্রান্তির আশঙ্কা আছে। কারণ পরিপ্রেক্ষিতের পার্থক্য বা বিভিন্নতা হেতু ‘সংঘ’ও ‘প্রতিষ্ঠান’ এই দুটি শব্দ বিভিন্ন অর্থের দ্যোতক হয়ে দাঁড়ায়। এই কারণে আলোচ্য শব্দ দুটির মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে সমাকভাবে অবহিত হওয়া আবশ্যক। সংঘ ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এই পার্থক্যমূলক বিচার বিশ্লেষণ সমাজতত্ত্বের আলোচনার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিপন্ন হয়। নিম্নলিখিত যুক্তি ও বক্তরা থেকে সংঘ ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্য স্পষ্টত প্রতিপন্ন হয় ।

১) সংস্থা হল সংঘ, তার কার্যপদ্ধতি হল প্রতিষ্ঠান : সংঘ বলতে বোঝায় কোন সংগঠিত গোষ্ঠী বা সংস্থাকে। পক্ষান্তরে সেই সংখ্যুটি যে সমস্ত কার্যপদ্ধতির দ্বারা পরিচালিত হয় সেগুলি হল তার প্রতিষ্ঠান। অর্থাৎ যখন সংঘের কার্যপদ্ধতির কথা বলা হয়, তখন তা হল প্রতিষ্ঠান। যেমন আই হল মানবগোষ্ঠীর একটি সংঘ বা সংগঠন। অপরদিকে এই সংগঠনের সংবিধান সরকার, সরকারি বিধি-ব্যবস্থা, নির্বাচন প্রভৃতি হল এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠান।

২) প্রতিষ্ঠানের তুলনায় সংঘ ব্যাপকতরঃ– প্রতিষ্ঠানের তুলনায় সংঘ হল অনেক বেশি। প্রকৃত প্রস্তাবে প্রতিষ্ঠান বলতে বোঝায় সমাজে প্রচলিত প্রথা, কার্যপদ্ধতি, নিয়ম বা সমাজ ব্যক্তিবর্গের মধ্যে প্রচলিত ও প্রতিষ্ঠিত সম্পর্কের রীতি। পক্ষান্তরে সংঘগুলি হল এই সমস্ত প্রথা, কর্মপদ্ধতি বা বিধিব্যবস্থার উৎস বিশেষ। সুতরাং সংঘের কার্যপদ্ধতি বা উপায়ই হল প্রতিষ্ঠান।

 ৩) সংঘ উদ্দেশ্যভিত্তিক, প্রতিষ্ঠান কার্যভিত্তিক :- সমাজে বসবাসকারী এক বা একাধিক উদ্দেশ্য থাকে। সেই সমস্ত উদ্দেশ্য সাধনের জন্য মানুষ সংঘের সৃষ্টি করে। আবার সংশ্লিষ্ট সংঘসমূহের কতকগুলি উপায় বা প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করা হয়। এগুলি হল স্থাপনের উদ্দেশ্য স্থাপনের উপায় বা পদ্ধতি হিসাবে কার্যকর থাকে। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠান হল সংঘের উদ্দেশ্য সাধনের উপায় বা পদ্ধতি। সুতরাং সংঘ হল উদ্দেশ্যভিত্তিক । পক্ষান্তরে,  প্রতিষ্ঠান হল সংঘের কার্যপদ্ধতি বা কাযক্রম। এ দিক থেকে বিচার করলে প্রতিটি সংঘ হল প্রতিষ্ঠানভিত্তিক।

৪) সংঘের সদস্য হওয়া যায়, প্রতিষ্ঠানের নয় :- সমাজের অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিবর্গ সংঘের সদস্যহতে পারে। কিন্তু তারা প্রতিষ্ঠানের সদস্য হতে পারেনা। বস্তুত ব্যক্তি সংঘের সদস্য হতে পারে এবং হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের সদস্য হওয়া যায় না। বিষয়টি উদাহরণ সহযোগে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। রাষ্ট্র হল একটি সংঘ এবং সংবিধান হল তার প্রতিষ্ঠান। ব্যক্তি রাষ্ট্রের সদস্য হয়। কিন্তু ব্যাক্তি সংবিধানের সদস্য একথা বলা যায় না। অনুরূপভাবে পরিবার হল এটি গুরুত্বপূর্ণ সার্বজনীন সংঘ। পরিবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হল বিবাহ ব্যবস্থা। ব্যক্তি পরিবারের সদস্য হয়। কিন্তু এমন কথা বলা হয় ন যে ব্যক্তি বিবাহের সদস্য।

৫) সংঘগুলি পরস্পর নির্ভরশীল, প্রতিষ্ঠানগুলি নয় সমাজের অন্তর্ভূক্ত সংঘসমূহ পরস্পরের উপর নির্ভরশীল। এই নির্ভরশীলতা বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু সংঘগুলি কর্তৃক অনুসৃত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। পরস্পরের উপর সে অর্থে নির্ভরশীল নয়। সামাজিক সংর উদ্দেশ্য ও কর্মপদ্ধতি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র নয়। স্বভাবতই সংঘগুলি পরস্পরের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে। সংঘ কার্যপদ্ধতি বা প্রতিষ্ঠানকে প্রভাবিত করে থাকে। এবং অনুরূপভাবে সংঘ প্রতিষ্ঠানের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসাবে বিবাহের কথা বলা যায়। পরিবারের সাংগঠনিক প্রকৃতিতে বিবাহের পদ্ধতি প্রভাবিত করতে পারে। ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের ভিত্তিতে সম্পাদিত সাংগঠনিক প্রকৃতিকে বিবাহের পদ্ধতি প্রভাবিত করতে পারে। ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের ভিত্তিতে সম্পাদিত বিবাহ বা প্রেম-ভালোবাসা-ঘটিত বিবাহের ফলস্বরূপ যৌথ পরিবার ব্যবস্থা ভেঙে যেতে পারে এবং তার পরিবর্তে একক পরিবার গড়ে উঠতে পারে।

 ৬) মানুষ সংঘের মধ্যে জন্মায়, প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কাজ করে সংঘের মধ্যেই মানুষের জন্ম হয়। এবং সেই সংঘের মধ্যেই মানুষ প্রতিপালিত হয়। মানুষ বড় হয় এই সংঘের মধ্যেই। কিন্তু মানুষ কাজ করে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। প্রচলিত প্রতিষ্ঠাগুলিকে অনুসরণ করেই সমাজস্থ ব্যক্তিবর্গ তাদের কাজকর্ম সম্পাদন করে থাকে।  সমাজজীবনের পক্ষে বহু ও বিভিন্ন সংগঠন অত্যন্ত প্রয়োজনীয় প্রতিপন্ন হয়। তেমনি আবার এই সমস্ত সামাজিক সংগঠন বিভিন্নন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের গতিশীলতা বজায় রাখে ।

৭) প্রত্যেকটি সংঘের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ : পৃথক প্রতিষ্ঠান থাকে। সেই সমস্ত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই সংশ্লিষ্ট সংঘের কার্যক্রম পরিচালিত বা সম্পাদিত হয়। এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সংঘের সদস্যদের আচার আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

৮) সৃষ্টির ক্ষেত্রে পার্থক্য :- সমাজে সংঘের সৃষ্টি হয় সমাজস্থ ব্যক্তিবর্গের সাধারণ ইচ্ছার ভিত্তিতে। অনুরূপভাবে প্রচলিত বিধি-ব্যবস্থার সৃষ্টি হয়। ব্যক্তিবর্গের মধ্যে সংগঠন সৃষ্টির এই সাধারণ ইচ্ছা জাগ্রত হয় সাধারণত কোন অভিন্ন বা সাধারণ স্বার্থের পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক প্রতিষ্ঠান সৃষ্টির ক্ষেত্রে এ কথা পুরোপুরি প্রযোজ্য নয়। সমাজের সংখসমূহের উদ্দেশ্য চরিতার্থ ও অস্তিত্ব অব্যাহত রাখার জন্য প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা হয়। 

৯) সংঘের আত্মগত ও বিষয়গত দিক আছে, প্রতিষ্ঠানের নেইঃ– সামাজিক সংঘসমূহ প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনে পরিবর্তন করতে পারে বা একেবারে নতুন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করতে পারে। আবার উদ্ভুত অবস্থার তাগিদে সংঘ তার কোন প্রতিষ্ঠানকে বাতিল করতে পারে। এই কারণে সামাজিক প্রতিষ্ঠানসমূহ সংঘের অন্তর্ভূক্ত বিষয় হিসাবে বিবেচিত হয়, এগুলিকে বাইরের বিষয় বলা যায় না। আবার সামাজিক সংঘসমূহের আত্মগত দিক এবং বিষয়গত দিক উভয় দিকই আছে। কিন্তু সামাজিক প্রতিষ্ঠান সমূহের ক্ষেত্রে এ কথা প্রযোজ্য নয়। প্রশ্ন : সংস্কৃতির সংজ্ঞা দাও? কীভাবে সংস্কৃতি সভ্যতায় পরিণত হয় ? উঃ ‘সংস্কৃতি’ এই প্রত্যয়টি ব্যাপকভাবে অর্থবহ একটি ধারণা। মানুষের জীবনধারার সবকিছু এর অন্তর্ভুকৃত। মানুষের আচার আচরণ, ধর্ম দর্শন, ন্যায়-নীতি, ঐতিহ্য-প্রথা, রাজনীতি-অর্থনীতি প্রভৃতি সর্ববিধ ক্রিয়াকলাপ সংস্কৃতির অন্তর্ভূক্ত। সামাজিক বা ব্যক্তিগত জীবনে মানুষ যা কিছু অর্জন করেছে সে সবই সংস্কৃতির অন্তর্গত। সংস্কৃতি হল সমগ্র সামাজিক উত্তরাধিকার যা ব্যক্তি গোষ্ঠীর কাছ থেকে পায় ।

● সংজ্ঞা সম্পর্কে সমস্যা : আধুনিক কালের সভ্য সমাজব্যবস্থায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত একটি ধারণা হল সংস্কৃতি’। অথচ এই সংস্কৃতি কাকে বলে সে বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট ও সর্বজনগ্রাহ্য সংজ্ঞা দেওয়া সহজ নয়। সংস্কৃতি সম্পর্কে বহু ও বিভিন্ন সংজ্ঞার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানী ভিন্ন ভিন্ন দিক থেকে সংস্কৃতির মূল সুরটি অনুধাবনে উদ্যোগী হয়েছেন। বিভিন্নভাবে সংস্কৃতিকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। সমাজতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, ইতিহাস ও সাহিত্যে সংস্কৃতির স্বতন্ত্র সংজ্ঞা পাওয়া যায়। আবার মার্কসীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সংস্কৃতির স্বতন্ত্র সংজ্ঞা দেওয়া হয়। সংস্কৃতি সম্পর্কিত সংজ্ঞাগুরি কোনটিই এককভাবে সম্পূর্ণ বা সঠিক নয়। অথচ প্রতিটি সংজ্ঞার মধ্যেই অল্পবিস্তর বৈধ উপাদান বর্তমান। সংস্কৃতির সংজ্ঞা সম্পর্কে এ রকম অসম্পূর্ণতা একটি আপেক্ষিক সমস্যা হিসাবে বিবেচিত হতে থাকে।

● বুৎপত্তিগত অর্থ বা সংকীর্ণ অর্থ :- প্রথমে সংস্কৃতি শব্দের বুৎপত্তিগত অর্থ সম্পর্কে অবহিত হওয়া আবশ্যক। সংস্কৃতি হল একটি বাংলা শব্দ। এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হল ‘Culture’। এই ইংরেজি শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে লাতিন শব্দ colere’ থেকে। লাতিন শব্দটির অর্থ হল কর্ষণ করা। সুতরাং ‘সংস্কৃতি বা ‘culture’ হল কর্ষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত বিষয়। এ প্রসঙ্গে agriculture’, ‘pisiculture’ প্রভৃতি ইংরেজি শব্দের উল্লেখ করা যায়। এই কারণে বাংলায় সংস্কৃতি অর্থে ‘কৃষ্টি’ শব্দটিও ব্যবহার করা হয়। অতএব বুৎপত্তিগত বিচারে সংস্কৃতি বলতে বোঝায় সংস্কারের বা মার্জনার মাধ্যমে প্রাপ্ত। সুতরাং এই অর্থে সংস্কৃতি হল ব্যক্তি-মানুষের শিক্ষা-দীক্ষা, বিচার-বুদ্ধি, আচার অনুষ্ঠান, রীতি-নীতি প্রভৃতির সংস্কৃত বা মার্জিত রূপ। এ হল সমস্ত কিছুর এক অধিকতর উন্নত অভিব্যক্তি। সংস্কৃতি হল শিক্ষা ও চর্চার দ্বারা পরিশীলিত আচার-অনুষ্ঠান বা মার্জিত রুচি। অন্যভাবে বলা যেতে পারে যে সংস্কৃতি হল অশিক্ষা, অশিষ্টতা, রুক্ষত প্রভৃতির বিরোধী বিষ। এ দিক থেকে সংস্কৃতি হল সেই বিষয় যা অনুশীলিত বা পরিপক্ষ এবং যা স্থূল ও অমার্জিত অবস্থার বিপরীত। স্বভাবতই সংস্কৃতি বলতে সাধারণভাবে বোঝায় সুশিক্ষা, সুনীতি, সু আচার, সুরুচি প্রভৃতি। তবে সংস্কৃতির এই প্রচলিত অর্থ হল সংকীর্ণ অর্থ।

                 ● সংস্কৃতির অর্থে শিক্ষা :- অনেকে আবার সংস্কৃতি অর্থে শিক্ষার কথা বলেন। তবে সংকীর্ণ অর্থে নয়, ব্যাপক অর্থে শিক্ষা হল সংস্কৃতির দ্যোতক। ম্যাকেঞ্জির অভিমত অনুসারে ব্যাপক অর্থেই শিক্ষা সংস্কৃতির সাধারণ পরিচয় বহন করে থাকে। 

● বস্তুগত ও অ–বস্তুগত উপাদানের সংমিশ্রিত রূপ : সমাজতত্ত্বে সংস্কৃতি’ শব্দটি ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সংস্কৃতি বলতে মানুষের শ্রম ও মেধার ভিত্তিতে অর্জিত বৈষয়িক ও মানস সম্পদের সমষ্টিকে বোঝায়। জীবনবোধ ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের স্বার্থে মানুষ ক্রমান্বয়ে সৃষ্টি করে চলেছে বহু বিভিন্ন বৈষয়িক সম্পদও মানস সম্পদ। বৈষয়িক সম্পদের অন্তর্ভুক্ত হল যাবতীয় বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সৃষ্টি এ চারুকলা । এগুলি মানবজীবনের পার্থিব সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের উপকরণ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। অপরদিকে সাহিত্য, ললিতকলা, ধর্ম, দর্শন প্রভৃতি মানস-সম্পদের অন্তর্ভূক্ত। এগুলি সমাজস্থ ব্যক্তিবর্গের জীবনরসের উৎস হিসাবে বিবেচিত হয়। সংস্কৃতি হল মানুষের বৈষয়িক সম্পদ ও মানব সম্পদের সংমিশ্রিত প্রকাশ। সমাজব্যবস্থার অন্তর্ভুকৃত ব্যক্তিবর্গ বহুবিধ পার্থিব বিষয়ে ব্যাপৃত থাকে। তেমনি আবার তারা বিভিন্ন অপার্থিব ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়। পার্থিব প্রয়োজনের তাগিদে মানুষ কৃষিকর্ম সূত্রে খাদ্য উৎপাদন করে, কলকারখানায় বিভিন্ন ধরনের শিল্প সামগ্রী সৃষ্টি করে। এই মানুষই আবার চারুকলা, সাহিত্য ও সঙ্গীত চর্চায় সামিল হয়। অর্থাৎ অ-বস্তুগত বিষয়েও মানুষের উৎসাহ ও আগ্রহের অভাব নেই। সমাজস্থ ব্যক্তিবর্গ প্রাত্যহিক পার্থিব প্রয়োজন পূরণের তাগিদে বহুবিধ বস্তুগত সামগ্রী সৃষ্টি করে। আবার সামাজিক রীতি-নীতি, আচার-অনুষ্ঠান, প্রথা প্রকরণ-প্রতিষ্ঠান প্রভৃতির প্রয়োজন ও প্রভাবকে সমাজবন্ধ মানুষ অস্বীকার করতে পারে না। এবং এই সমস্ত কিছুই হল সমাজের সদস্যদের অন্তর্ভূক্ত।

● সমগ্র জীবনযাত্রা প্রণালী :- সামগ্রিক বিচারে জীবনযাত্রার প্রবনধারাকেই বলা হয় সংস্কৃতি। সমাজ ও সমাজস্থ ব্যক্তিবর্গের বহুবিধ বিষয়ের এক মিশুর ও জটিল রূপ হল সংস্কৃতি। এই সমস্ত বিষয়ের মধ্যে রয়েছে সমাজের সমষ্টিগত জ্ঞান, নীতিবোধ, বিশ্বাস, আইন, কলা, প্রথা প্রভৃতি এবং সমাজবদ্ধ মানুষের যে কোন বিষয়ের অর্জিত অভ্যাস ও দক্ষতা। সমাজের সদস্য হিসাবে মানুষ যা কিছু করে সবই হল তার মানসিক বৃত্তির চর্চার ফল এবং এই কারণেই তা সংস্কৃতির পরিচায়ক। সুতরাং মানব সমাজের আচার অনুষ্ঠান, আশা আকাঙ্ক্ষা, আদর্শ, কার্যাবলী, ভাবধারা প্রভৃতি সব কিছুই হল সংস্কৃতির অন্তর্গত। এ প্রসঙ্গে এডওয়ার্ড টাইলর-এর অভিমত প্রণিধানযোগ্য। তাঁর মতানুসারে সংস্কৃতি বলতে সমাজস্থ বাক্তিবর্গের সমগ্রর জীবনযাত্রা প্রণালীকেই বোঝায়। এ ক্ষেত্রে পরিণত অপরিণত বা মার্জিত অমার্জিত এরকম ভেদাভেদ বা ধারণা সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। সুতরা সকল সমাজেরই সংস্কৃতি থাকে এবং আছে। তবে বিভিন্ন সমাজের সংস্কৃতি ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। সমাজভেদে সংস্কৃতি পরিণত বা অপরিণত এবং উননত বা অনুন্নত হতে পারে। এ প্রসঙ্গে ফস্টার-এর অভিমত প্রণিধানযোগ্য। তাঁর মতানুসারে সমাজ বলতে বোঝায়। জনসমষ্টি এবং সংস্কৃতি বলতে বোঝায় জনসমষ্টির আচার আচরণকে ব্যাপক অর্থে সংস্কৃতি হল সমাজস্থ ব্যক্তিবর্গের আচার আচরণের এক সামগ্রিক রূপ বা সমষ্টিগত প্রকাশ ।

● সমগ্র জীবনধারা :- প্রকৃত প্রস্তাবে সমাজস্থ ব্যক্তিবর্গের সমগ্র জীবনধারণ হল তাদের সংস্কৃতির বাস্তব প্রকাশ। মানুষ সামাজিক জীব। এই সুবাদে মানুষের যাবতীয় জাগতিক কাজকর্ম ও কর্মকুশলতা, আশা-আকাঙ্ক্ষা, চিন্তা-ভাবনা, ভাষা-সাহিত্য, শিল্প-চারুকলা, মূল্যবোধ, ন্যায়-নীতি প্রভৃতি সবই হল তার সংস্কৃতির পরিচায়ক বাহক। বস্তুত সমাজ মানুষের সামাজিক জীবনযাত্রার পদ্ধতির অন্তর্ভূক্ত সমস্ত কিছুই তার সংস্কৃতির অঙ্গীভূত। অর্থাৎ জীবনপ্রণালীর অন্তর্ভূক্ত সব কিছুই সংস্কৃতির দ্যোতক। এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসাবে সমাজের কৃষিকর্ম, গৃহ-নির্মাণ, শিল্পোৎপাদন, চারুকলা, আচার অনুষ্ঠান, প্রথা প্রকরণ, রক্ষন প্রণালী প্রভৃতির কথা বলা যায়। এগুলি সবই হল সংস্কৃতির বহিরঙ্গ। আবার সকল সমাজের রাষ্ট্রীয় ধর্মীয়, নৈতিক প্রভৃতি বিভিন্ন ক্ষেত্রে বহুবিধ আদর্শ বর্তমান থাকে। সমাজের সদস্যরা এই সমস্ত আদর্শ অনুকরণ করে এবং প্রচলিত নিয়ম-নীতি পালন করে। এসবগুলিও হল তার সংস্কৃতির অন্তর্গত। সুতরাং সামাজিক জীব হিসাবে মানুষ যা কিছু অনুশীলন বা চর্চা করে, শেখে বা আয়ত্ত করে সবই তার সংস্কৃতির সাক্ষ্য বহন করে। সমাজতত্ত্বের আলোচনায় সংস্কৃতি বলতে বোঝায় একটি জীবনধারাকে। অধ্যাপক ম্যাকাইভারের অভিমত অনুসারে ‘সংস্কৃতি হল আমরা যা তাই ।”

● মার্কসীয় ব্যাখ্যা :- মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সংস্কৃতির ধারণাকে স্বতন্ত্রভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। মার্কসবাদীদের অভিমত অনুসারে সংস্কৃতি হল উপরি কাঠামো অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হল সমাজের মৌল কাঠামোর ভিত বা বুনিয়াদ । এই অর্থে সামাজিক মৌল কাঠামোর উপর গড়ে ওঠে বিভিন্ন ধ্যান-ধারণা, অনুষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান প্রভৃতি উপরি-কাঠামো। এই উপরি কাঠামোই হল সংস্কৃতি। এ দিক থেকে বিচার করলে রাষ্ট্র-ব্যবস্থা, আইনব্যবস্থা পুলিশ প্রশাসন, আচার বিচার, রীতি-নীতি, শিল্পকলা, ধর্ম, দর্শন প্রভৃতি সবই হল সংস্কৃতি। বিভিন্ন সমাজের আর্থ সামাজিক মৌল কাঠানো ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতির হয়ে থাকে। স্বভাবতই বিভিন্ন সমাজের সংস্কৃতিও স্বতন্ত্র ধরনের হয়। সংস্কৃতি সম্পর্কিত মার্কসীয় বাখ্যার পরিচয় পাওয়া যায় মার্কস-এঙ্গেলসের “German ideology’ এবং লেনিনের ‘প্রলেতারিয়ান কালচার’ সম্পর্কিত মতামতের মধ্যে। তা ছাড়া এ প্রসঙ্গে পুকাচ, প্রামশী, মারকিউস প্রমুখ মার্কসবাদী চিন্তাবিদদের কথাও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই শ্রেণীর চিন্তাবিদ্রা ‘সংস্কৃতি’ শব্দটিকে ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করেছেন।

● সংস্কৃতি সহজাত নয় :- সংস্কৃতি হল পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যসাধনের তাগিদে সমাজস্থ ব্যক্তিবর্গের সযত্ন প্রচেষ্টার একত্রীভূত ফল। সুতরাং মানুষের সহজাত প্রবৃত্তির ফল নয়। সমাজস্থ ব্যক্তিবর্গের জীবনধারা অতীত থেকে পরিবর্তিত ও পরিমার্জিত হতে হতে বর্তমান অবস্থায় উপনীত হয়েছে। স্বভাবতই যে-কোন সমাজের সংস্কৃতি হল সুদীর্ঘ সময়ের ফসল ।  

                ● মানুষের প্রয়োজন পূরণে ব্যবহৃত বস্তু :- সংস্কৃতি কোন স্থিতিশীল বিষয় নয়। এর রূপ ও প্রকৃতি সদা পরিবর্তনশীল। সংস্কৃতির পরিবর্তন ভবিষ্যতেও অনিবার্য। মানুষের জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার অহরহ অগ্রগতি ঘটেছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন নতুন চিন্তা-চেতনার ও মতাদর্শের উন্মেষ ঘটছে। এই সমস্ত কিছুর প্রভাব-প্রতিক্রিয়া সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের প্রবাহকে অব্যাহত রাখে। এইভাবে মানবসমাজে সংস্কৃতি সামাজিক

উত্তরাধিকারের মাধ্যমে এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে বা এক যুগ থেকে অন্য যুগে প্রবাহিত থাকে। অর্থাৎ সামাজিক উত্তরাধিকারের মাধ্যমে সংস্কৃতি বর্তায়। এবং এই কারণে কেবলমাত্র মানুষই হল সংস্কৃতিবান জীব। অন্য কোন জীবের সংস্কৃতি নেই। কারণ অন্য কোন জীবের ক্ষেত্রে সামাজিক উত্তরাধিকারের বিষয়টি অপ্রাসঙ্গিক।

…………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

NSOU তে নিশ্চিন্তে পাস করার উপায়

• Maximum NSOU ছাত্রছাত্রীদের একটাই প্রশ্ন ; একটাই ভয় : “পাশ করবো তো? ”
• হ্যাঁ , অবশ্যই পাশ করবেন । সারাবছর পড়ো নি, তাই নিজেকে দুর্বল ভাবার কিছু নেই। এখনও হাতে অনেক সময় আছে। আমরা তো এক্সাম এর 2 দিন আগে পড়তাম , তাতেই 60% নম্বর এনেছিলাম। সেই সময় নোটস, সাজেশন খুব একটা পাওয়া যেত না।
  
• যেভাবে ভয় দূর করবেন?
• প্রথমত নিজের প্রতি আস্থা রাখুন, নিজেকে আগেই মরার আগে মেরে ফেলছন কেনো? জেনে রাখুন, সাজেস্টেড ওয়েতে সাজেস্টিভলি পড়াশনা করলে পাশ করতে বাধ্য । নোটস পড়ার আগে গত ৫ বছরের প্রশ্নপত্রগুলি ঘেঁটে দেখুন, বুঝে জাবেন ।
• মোবাইল এ  সময় টা সব নষ্ট না করে, সময় গুলো  একটু বই পরে, বা সাজেস্টেড সাজেশনের নোটসগুলো একটু রিডিং করুন, কন্সপেট ক্লিয়ার করুন, নিজেকে তৈরী রাখুন।
•  সিলেবাস সম্পর্কে ধারণা নিয়ে যাবেন ।
• যাদের বই নেই, কিন্তু নোটস আছে, নোটস সাজেশন গুলো, মুখস্ত করতে চেষ্টা করুন, খুব বেশি মুখস্ত না হলে, খাতায় লিখে লিখে পড়ুন, দেখবেন, পরীক্ষাতে কিছু হলেও লিখে আসতে পারবেন।
• শুধু পরলেই হবে না, সাথে মার্ক করুন  কোন কোন পয়েন্ট গুলো, মনে রাখতে হবে।
• এক্সাম হল-এ সবাই নার্ভাস ফিল করেন, এটাই খুব স্বাভাবিক, কেউই বিদ্যাসাগর নয়, ম্যক্সিমাম স্টুডেন্ট ঠিক আপনার মতই নার্ভাস থাকবে, তাই ভয় পাওয়ার কোনো কারন নেই , নিজের প্রতি ভরসা রাখুন আর ফাটিয়ে লিখে আসুন ।
• কোনো প্রশ্নের উত্তর পারবো না বলে ছেড়ে আসবেন না, যেটুকু পারবেন, সেই টুকুই ২-৪ লাইন লিখে আসুন।  মনে রাখবেন ব্ল্যঙ্ক পেজ রেখে আসবেন না।।
• স্যার তো চাইবেন আপনাকে নাম্বর দিতে কিন্তু আপনি কিছু না লিখে আসলে , কিভাবে আপনাকে নাম্বর দেবেন বলুন ? কিন্তু তাই বলে, গরুর রচনা তে নদীর রচনা লিখে এলে নিশ্চয় নম্বর পাবেন না। যে টপিক থাকবে, সেই টপিকি কিছু লিখে আসবেন।

Example > ম্যাকবেথ নিয়ে যেকোনো প্রশ্ন এলে, ম্যাকবেথ এর মূল ভাবটা যা জানেন তাই লিখে আসবেন,

বা ধরুন = সাহিত্য নিয়ে কোনো প্রশ্ন এলে, সেই টপিক অনুযায়ী যা জানেন তাই লিখে আসবেন, মোট কথা কোনো প্রশ্ন একটুও যদি আপনি জেনে থাকেন , খালি রেখে আসবেন না । ফর সিওর পাস আপনি  করবেই করবেন ।

• পরীক্ষার আগে, নিজেকে একটু সময় দিতে হবে, 2 দিন না হলে একদিন, দেখুন সারাজীবন-ই তো কাজ আর কাজ থাকবেই, তার মধ্যে আপনি যদি সময় বের করতে না পারেন, তাহলে তো আফসোস করতেই হবে আপনাকে এক্সাম হল-এ, তাইনা?  সবটা সবার উপর ছেড়ে দিতে নেই। নিজেও একটু পড়তে হবে।
• শেষকথা, প্রস্তুতি নিন, নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন, প্রতিদিন সামান্য হলেও পড়ুন, আর  সাজেশন গুলো ভালো করে ফলো করে যান । ফর সিওর পাস আপনি  করবেই করবেন ।

নোটস মুখস্ত করার টিপস

 ১। সম্পূর্ণ অনুচ্ছেদটি বারবার পড়ার উপর জোর দেওয়া:

আমাদের একটি বড্ড বাজে অভ্যাস রয়েছে, আমরা কী পড়লাম তার থেকে কতটুকু সময় পড়েছি তার উপর বেশী জোর দেই। ধরা যাক আজ সকালে উঠে আমি একটানা পাঁচ ঘণ্টা পড়েছি কিন্তু আসলেই কি সম্ভব একটানা পাঁচ ঘন্টা পড়া? টানা পাঁচ কেন দুই ঘণ্টাই মনোযোগ ধরে রাখা কিন্তু চাট্টিখানি কথা না, একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে পাঁচ ঘন্টার মাঝে কতবার আমাদের মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটেছে। হয়তো পড়ার মাঝেই আমাদের ফেসবুকের নোটিফিকেশন চেক করছি, মেইল চেক করছি, কিংবা ইউটিউবে ঢুকে বসে আছি। এভাবে ২-৩ ঘণ্টা পড়ার পর ভাবছি আজ না জানি কত বেশি পড়ে ফেললাম। অথচ এই সময়টুকুতে যতোটুকু পড়া যেতো তা কিন্তু হয় নি।

কোন টপিক শিখতে কত সময় পড়লাম সেটা কখনোই মুখ্য বিষয় নয়, বরং টপিকটি আমি কয়বার ভালোভাবে বুঝে পড়েছি সেটাই মুখ্য বিষয়।

সুতরাং, পড়তে বসার সময় কোন টপিক মুখস্থ করার জন্য কোন নির্ধারিত সময় ফিক্সড না করে বরং টপিকটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত লাইন বাই লাইন কয়েকবার পড়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। একটা দাঁতভাঙ্গা অনুচ্ছেদ প্রথমবার পুরোটা পড়লে যতটুকু কঠিন মনে হবে দ্বিতীয়বার পড়লে তুলনামূলক কম কঠিন মনে হবে। সুতরাং যতবার পুনরায় পড়া হবে ততোটাই সহজ মনে হবে।

২। অনুচ্ছেদটিকে ভেঙ্গে ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত করে পয়েন্ট আউট করে ফেলা:

টপিকটি সম্পূর্ণ লাইন বাই লাইন পড়া হয়ে গেলে যে সকল বাক্যগুলো দুর্বোধ্য সেগুলো আন্ডারলাইন করে ফেলতে হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো বের করে নিয়ে আসতে হবে। একেকটি পয়েন্ট একটি শব্দ কিংবা একটি ছোট বাক্যের সমন্বয়ে তৈরি হতে পারে। পয়েন্ট আউট করাটা অবশ্যই বুদ্ধিমত্তার সাথে করতে হবে যেন একবার পড়ার সাথে সাথেই টপিকটির একটি বিশেষ অংশ মাথায় ঘোরা শুরু করে।

৩। মার্কার পেন ব্যবহার করা

কেউ কেউ ঝকঝকে বই ভালবাসেন আবার অনেকেই লাল নীল রঙ্গে বই ফুটিয়ে তোলেন। তবে আমাদের মধ্যে বেশিরভাগই মার্ক করে বা দাগিয়ে পড়তে ভালবাসেন। এটাও পড়া মনে রাখতে বেশ কার্যকর। গুরুত্বপূর্ণ অংশটুকু চিহ্নিত করার ফলে কোন শব্দ বা বাক্যের প্রতি আকর্ষণ ও আগ্রহ বেড়ে যায়। সেই সাথে ঐ অংশটুকুর উপর ব্রেইণের ভিজ্যুয়ালিটি ইফেক্টও বেড়ে যায় যা পড়াকে মনে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা করে।

৪। বেশি বেশি পড়া ও অনুশীলন করা

পড়া মুখস্ত করার জন্য শুধু পড়লেই হবে না, লিখতেও হবে বারবার। মানুষের ব্রেইন ক্ষণস্থায়ী স্মৃতি গুলোকে ঠিক তখনই দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিতে পরিণত করে যখন সেটা বার বার ইনপুট দেয়া হয়।

একই জিনিস বারবার ইনপুট দেওয়ার ফলে ব্রেইণ তার স্মৃতি গঠনের স্থানে একটি গাঠনিক পরিবর্তন আনে, যা দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি তৈরীতে সাহায্য করে। সুতরাং পড়া মনে রাখার অন্যতম উপায় হলো বেশি বেশি পড়া ও অনুশীলন করা।

৫। পড়ার জন্য সঠিক সময় নির্বাচন

প্রায় অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রীর ধারণা সারাদিন-সারারাত পড়লেই পড়া বেশি মনে থাকে। এটা নিতান্তই একটা ভুল ধারণা। এর কারণ হলো সবসময় আমাদের ব্রেইন একইভাবে কাজ করতে সক্ষম হয় না। তবে পড়ার জন্য একটা রুটিন বানানো উচিৎ । 

অবশেষে বলবো পড়াশনাটা আপনাকেই করতে হবে তাই আপনার সময় মতো পড়াশনার রুটিন বানিয়ে পড়াশনা শুরু করুন, সময় খুবই কম । যত তাড়াতাড়ি আপনি পড়াশনা শুরু করবেন তত এগিয়ে থাকবেন।

“মনে রাখবেন “সময় একটি শব্দ মাত্র যেটি চলে গেলে কখনই ফিরে আসে না ।

 And Your Time Start NOW ! ”

…………………………………………………………………………………………………………..

CONTACT // WHATSD APP – 8479091027

message me : https://wa.me/918479091027

EMAIL. malymaity94@gmail.com

CHECK OUT THE PLATFORM:

TO VISIT MY BLOG LINK :https://mminstitution.blogspot.com/​​​​​

👉 👉 Subscribe MY YouTube Channel :- http://www.youtube.com/c/MMINSTITUTIO…

👉 👉 Join 📚 MM INSTITUTION📚 FACEBOOK Group 2️⃣ :-

https://www.facebook.com/groups/20444…

👉👉join my telegram group:

https://t.me/mm_instituti​​​​​

👉👉join my Facebook page:

https://www.facebook.com/nsouhelp