UG CC-PS-01 SAMPL NOTE

MM INSTITUTION

👇DOWNLOAD UG SAMPLENOTE (CC-PS-01) 👇

রাজনীতির অর্থ এবং রাজনৈতিক তত্ত্ব

ANS.  ‘রাজনীতি সম্পর্কে নানা প্রশ্ন ও বিতর্ক যেমন দেখা দিয়েছে তেমনি এ ব্যাপারে মতানৈক্য ও প্রকাশিত হয়েছে বর্তমান রাজনীতি বিষয়ক আলোচনার মধ্যে। যদিও প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে Politics নামক গ্রন্থটি রচনা করে অ্যারিস্টট্ল এর সূত্রপাত করেন। ‘রাজনীতি’ সম্পর্কিত ধারণাটি তখন থেকেই প্রচলিত। অ্যারিস্টট্ল স্পষ্টভাবে এ কথা বলেন যে, মানুষ স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক জীব। আর মানুষ তার জীবনের পরিপূর্ণতা লাভ করে রাষ্ট্রের মধ্যেই। রাষ্ট্রের মধ্যেই ব্যক্তি তার অধিকারকে খুঁজে পায়, অথবা বলা যায় রাষ্ট্রই ব্যক্তিকে অধিকার প্রদান করে। প্রাচীন কালে গ্রিসে Polis নামে যেসব স্বাধীন ও স্বশাসিত নগর-রাষ্ট্র ছিল তাতে সরকারি ব্যবস্থা সম্পর্কিত আলোচনা ‘রাজনীতি’ বা ‘Politics’ নামেই অভিহিত হত। বিশ শতকের গোড়ার দিকে রাজনীতি সম্পর্কিত আলোচনার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। এই সময় থেকে রাজনীতি একটি ব্যাপক ও ক্রিয়াশীল সামাজিক ক্রিয়াকলাপ হিসেবে পরিচিত হতে থাকে। অর্থাৎ রাজনীতির ক্ষেত্র এই সময় থেকে একটি বৃহত্তর সমাজে রূপান্তরিত হয় এবং ‘রাজনীতি’ হয়ে ওঠে একটি ‘প্রক্রিয়া’ (Process)-বিশেষ। এই কারণে বৈচিত্র্যময় সমাজের নানা নিয়ম (Norms) ও প্রবণতা (Trend)-কে কেন্দ্র করে রাজনীতিও বৈচিত্র্যপূর্ণ হয়ে ওঠে, অর্থাৎ অ্যালান বলের ভাষায় “Political activity is based on diversity”। যার বিষয় হয়ে ওঠে মতানৈক্য, সংঘাত ও বিরোধ। রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত কতকগুলি বিষয় যেমন, রাষ্ট্র ও সরকারি ব্যবস্থা, সংগঠন, শাসন- আইন ও বিচার বিভাগ, আমলাতন্ত্র, আরক্ষা বিভাগ প্রভৃতি জনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানসমূহ জনস্বার্থ সম্পর্কিত ক্রিয়াকলাপের সঙ্গে যুক্ত করে ফেলেছে।

রাজনীতিকে শুধু ‘সমস্যা’ বা ‘সংঘাত’ (confliet) সৃষ্টিকারী বিষয় হিসেবেই দেখা হয়নি। কারণ উদারনীতিবাদীরা মনে করেন রাজনীতি কেবল ‘সমস্যা’ বা ‘সংঘাত’ সৃষ্টিকারী বিষয় নয়— রাজনীতি সমস্যার সমাধান এবং সংঘাতের বিলোপসাধনকারী এমন একটি বিষয়, যাকে কেন্দ্র করেই নানা তাত্ত্বিক আলোচনায় বিতর্ক লক্ষণীয়। আর্নেস্ট বেন তাই রাজনীতি সম্পর্কে বলেছেন যে, রাজনীতি হল এমন একটি সমস্যা সৃষ্টি করার কৌশল, যেখানে সমস্যা দেখা দিক বা না দিক রাজনীতি সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলিকে ভ্রান্তিমূলকভাবে তুলে ধরে এবং সেইসব সমস্যার প্রতিকারের কথা বলে ।

সম্পদের পরিমাণ মানুষে আসীম চাহিদার তুলনায় অনেক কম বলে তা মানুষের চাহিদা পরিপূরণে ব্যর্থ হয় এবং এই কারণেই সীমিত সম্পদকে কেন্দ্র করে দেখা দেয় দ্বন্দ্ব বা সংঘাত। এই দ্বন্দ্ব বা সংঘাত পরিচালিত হয় ক্ষমতার মাধ্যমে। রাজনীতিকে ক্ষমতার প্রতিফলন হিসেবে গণ্য করার জন্য রাজনীতি সংক্রান্ত আলোচনার পরিধি হয়ে পড়েছে অত্যন্ত ব্যাপক। ডেভিড ইস্টন তাই রাজনীতিকে “কর্তৃত্বসম্পন্ন বরাদ্দের বণ্টন” বলে মনে করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন যে, বৈধভাবে ক্ষমতা অর্জনকারী কর্তৃত্বসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ সমাজের যেসব মূল্যবান কিছু বণ্টন করে তার জন্য তাকে সরকারি সিদ্ধান্ত বা নীতি প্রণয়ন করে নিতে হয়। এই নীতি প্রণয়ন বা সিদ্ধান্তগ্রহণের পিছনে থাকে ওইসব সীমিত সম্পদকে সমাজের মানুষের মধ্যে বণ্টন করার তাগিদ।

আবার ধ্রুপদি মার্কসবাদেও দেখা যায় যে, সমাজে পরস্পরবিরোধী দুটি মুখ্য শ্রেণির স্বার্থসমূহের পরিণতি হল রাজনীতি। মার্কসীয় দৃষ্টিতে সমাজের উপরি কাঠামো হিসেবে রাজনীতিকে গণ্য করা হয়। বুর্জোয়ারাই এর ধারক ও বাহক। অর্থনৈতিক দিক থেকে বলীয়ান শ্রেণি দ্বারা রাজনীতি নিরূপিত ও আবর্তিত হয়। এই কারণে লেনিন রাজনীতিকে বলেছেন অর্থনীতির ঘনীভূত প্রকাশ।

ইংরেজি ‘Theory’ শব্দটি গ্রিক শব্দ ‘Theoria’ থেকে উদ্ভূত, যার বাংলা প্রতিশব্দ হল ‘তত্ত্ব’। ব্যুৎপত্তিগত দিক থেকে ‘তত্ত্ব’ বলতে ‘দৃষ্টি’ বোঝায়—এই দৃষ্টি হল যথাযথ ও সুস্পষ্ট। ‘তত্ত্ব’ বাস্তব ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন জ্ঞানের পুষ্টি প্রদান করে। তবে তত্ত্বের অবস্থান, এর প্রাসঙ্গিকতা, বর্তমানে তা কতদূর প্রাসঙ্গিক হতে পারে—এইসব ব্যাপারে রাষ্ট্রতাত্ত্বিকদের মধ্যে মতপার্থক্য আছে। তাঁরা কোনো একটি স্থির সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি। সাধারণভাবে এ কথা মনে করা হয় যে, ‘তত্ত্ব’ ও ‘তথ্য’-এর মধ্যে কোনোরূপ সম্পর্ক নেই। কিন্তু তা নয়। তথ্যকে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ এবং সুসংবদ্ধ ও সুসংগঠিত করার ক্ষেত্রে তত্ত্বের প্রয়োজনীয়তা আছে। অর্থাৎ তত্ত্বের মধ্য দিয়েই তথ্য একটি স্বাভাবিক রূপে প্রকাশ পায়। রাজনৈতিক গবেষণার ক্ষেত্রে তত্ত্ব রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে একটি বিশিষ্ট মর্যাদায় উন্নীত করেছে। তত্ত্ব বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা তত্ত্বের মাধ্যমে তাঁদের চিন্তাধারাকে ব্যক্ত করেন।

অনেকে মনে করেন রাষ্ট্রকাঠামো বা রাষ্ট্রব্যবস্থা হল প্রাচীন। রাজনৈতিক তত্ত্ব গড়ে ওঠার অনেক আগেই রাষ্ট্রব্যবস্থার জন্ম হয়। দীর্ঘকাল ধরে রাষ্ট্রব্যবস্থার অন্তর্গত থাকার ফলে এবং রাষ্ট্রীয় আইন ও পরিচালন ব্যবস্থা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়ার ফলে মানুষের মধ্যে রাজনীতি সম্পর্কে যেসব সুসংবদ্ধ ধারণার জন্ম হয় এবং সমাজজীবন ও রাষ্ট্রজীবন সম্পর্কে যে সুসংবদ্ধ চিন্তাভাবনা গড়ে ওঠে তা থেকেই জন্ম নেয় ‘রাষ্ট্রতত্ত্ব’। অর্থাৎ, রাষ্ট্রব্যবস্থার জন্ম হয় আগে এবং রাজনৈতিক তত্ত্বের সৃষ্টি হয় তার অনেক পরে।

তাই রাজনৈতিক তত্ত্ব বলতে এমন এক বিষয়কে বোঝায়, যা কতকগুলি রাষ্ট্রকেন্দ্রিক সাধারণ বিষয়ের সূত্রবদ্ধ রূপ যেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক সমস্যা ও সমাধান, বিভিন্ন মূল্যবোধ, বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনার মধ্যে সম্পর্ক, গোষ্ঠীজীবন ও সংগঠিত সমস্যা সম্পর্কে চর্চা করা হয়। ‘তত্ত্ব’ মূলত তিন ধরনের কাজ করে।

● প্রথমত, নির্দিষ্ট প্রশ্নের লক্ষ্যে প্রাসঙ্গিক তথ্যের দ্বারা জ্ঞানকে সংগঠিত করে।

● দ্বিতীয়ত, প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে অনুসিদ্ধান্ত গড়ে তোলার প্রয়াস ঘটানোর কাজ করে।

● তৃতীয়ত, সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে তত্ত্ব বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। ‘বিশ্লেষণ’ করার একটি বিশেষ পদ্ধতিকে বোঝাতে ‘দৃষ্টিভঙ্গি’ শব্দটিকে ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে ‘দৃষ্টিভঙ্গি’ শব্দটি ব্যাপক অর্থসূচক। তা ছাড়া ‘দৃষ্টিভঙ্গি’ বলতে অনুসন্ধান ও আলোচনার বিষয়বস্তুকেও বুঝিয়ে থাকে। প্রত্যেকটি সমাজবিজ্ঞান এক- একটি দিক বা লক্ষ্য নিয়ে আলোচনা করে। একটি নির্দিষ্ট দিক নিয়ে আলোচনা করলে বিষয়বস্তুটি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞানলাভ সম্ভব। রাজনীতি পাঠের ঐতিহ্য হল দীর্ঘকালের একটি ধারা। এই পাঠের জন্য নানারকমের দৃষ্টিভঙ্গির উন্মেষ ঘটেছে। এই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল—

● নীতিমানবাচক দৃষ্টিভঙ্গি : নীতিমানবাচক দৃষ্টিভঙ্গিটি রাষ্ট্র ও রাজনীতির আলোচনার ক্ষেত্রে প্রাচীনকাল থেকেই আলোচিত হয়ে আসছে। রাষ্ট্র ও রাজনীতির আলোচনার ক্ষেত্র হিসেবে নীতিমানবাচক দৃষ্টিভঙ্গিটি একসময় আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল। নীতিমানবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে ঘটনার বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয় না বা বাস্তব ঘটনার কোনো বর্ণনা দেওয়া হয় না। এক্ষেত্রে বিষয়টির লক্ষ্য কী বা কী হওয়া উচিত এবং তার আদর্শ নিয়ে আলোচনা করে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে নীতিমানবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মূল কথা হল রাষ্ট্র ও বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলির আদর্শ কী বা তার উদ্দেশ্যসমূহ কী সে ব্যাপারে আলোকপাত করা। প্লেটো তাঁর ‘আদর্শ রাষ্ট্রের’ ধারণাটি এই দৃষ্টিভঙ্গির দ্বারাই আলোচনা করেছিলেন।

● সনাতন দৃষ্টিভঙ্গি : অধ্যাপক অ্যালান বল সনাতন দৃষ্টিভঙ্গি বলতে সেইসব দৃষ্টিভঙ্গিকে বুঝিয়েছেন, যা 1900 খ্রিস্টাব্দের আগে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনার ক্ষেত্রে অনুসৃত হত। তিনি মনে করেন তিনটি ধারায় এই সময় রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনা হত— [1] দার্শনিক, [2] ঐতিহাসিক এবং [3] আইনগত। এই তিন বিষয়ের দ্বারা প্রভাবিত রাজনৈতিক আলোচনাকে বলা হয় সাবেকি বা সনাতন দৃষ্টিভঙ্গি।

● আচরণবাদী দৃষ্টিভঙ্গি : আচরণবাদের কোনো সুস্পষ্ট সংজ্ঞা দেওয়া হয়নি। তবে বলা যায় যে, অভিজ্ঞাতাবাদী তত্ত্বগঠন এবং তত্ত্ব ও গবেষণার পারস্পরিক নির্ভরশীলতার ওপর ভিত্তি করে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিজ্ঞানসম্মত পর্যালোচনার ক্ষেত্রে একটি রাজনৈতিক কাঠামো গড়ে তোলার উদ্যোগই হল আচরণবাদ। রবার্ট ডাল আচরণবাদকে ‘রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনাচর্চার একটি প্রতিবাদ আন্দোলন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। আচরণবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে আলোচনার যথার্থতা নির্ণয়ের জন্য তথ্যসংগ্রহ ও ব্যাখ্যা সংক্রান্ত যান্ত্রিকতার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। আচরণবাদীরা মনে করেন, গবেষণাকে সর্বজনগ্রাহ্য করার জন্য তথ্য পর্যালোচনার যথার্থ কৌশল ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া উচিত।

● নয়া আচরণবাদী দৃষ্টিভঙ্গি : রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মধ্যে সুশৃঙ্খল আলোচনার ক্ষেত্রে আচরণবাদী চিন্তকদের সংকট দেখা দিয়েছিল এবং মতাদর্শগতভাবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা দু- ভাগে ভাগ হয়ে যান—আচরণবাদী এবং পরস্পরবাদী। তবে তাঁরা অনুভব করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় প্রচলিত ধারার পরিবর্তন প্রয়োজন। কাজেই আচরণবাদী চিন্তার বিরুদ্ধে গড়ে ওঠার পথ পায় ‘নয়া আচরণবাদ’। বলা যায়, নয়া-আচরণবাদ হল আচরণবাদের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ মাত্র। নয়া-আচরণবাদ আচরণবাদীদের প্রতি প্রতিবাদ জানিয়ে বলে যে, এই গবেষণা বর্তমান সাংঘাতিক সামাজিক ব্যাধিসমূহের ভয়াবহ পারমাণবিক বিকাশ এবং পারমাণবিক যুদ্ধের সার্বিক ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। আচরণবাদের নির্দিষ্ট প্রবক্তা ডেভিড ইস্টন আচরণবাদী গবেষণা বা কৌশলকে প্রথম আক্রমণ করেন।

● মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গি : মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গি সমগ্র বিশ্বসমাজের একটি সামাগ্রিক রূপ। সমাজের উৎপত্তি ও বিকাশ, রাষ্ট্রব্যবস্থার গতিপ্রকৃতি, রাষ্ট্রের প্রয়োজন কতখানি, অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সঙ্গে রাষ্ট্রব্যবস্থার সম্পর্ক প্রভৃতি মার্কসীয় দৃষ্টিতে গুরুত্ব লাভ করেছে। মার্কসবাদীরা মনে করেন বুর্জোয়া সমাজে রাজনীতি হল উপরিকাঠামোর একটি উপাদান-বিশেষ। তাই তাঁরা রাজনীতিকে শ্রেণিসংগ্রামের বিশেষ অভিব্যক্তিরূপে প্রকাশ করেছেন। বুর্জোয়া সমাজে রাজনীতি হল সংঘাত ও আধিপত্যের একটি বিষয়।

● নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গি : জৈবিক দিক থেকে নারী ও পুরুষের মধ্যে স্পষ্ট ভেদরেখা টানা সম্ভব হলেও এই বিভাজনের বাইরে ‘নারীত্ব’ ও ‘পৌরুষ’-এর যে ধারণাটি গড়ে ওঠে তা একটি জটিল প্রকৃতির সৃষ্টি করে। লিঙ্গবৈষম্যের শুরু ও তার বিকাশ পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় ঘটে। সাধারণ অর্থে পুরুষের কর্তৃত্ব বা আধিপত্যকে বলা হয় পিতৃতন্ত্র। শ্রেণিবিভক্ত সমাজব্যবস্থায় উৎপাদন প্রক্রিয়ার অগ্রগতি থেকে নারীদের সরিয়ে এনে গৃহবন্দি করে দেওয়া হয়। তাদের কাজ হয় সন্তান উৎপাদন, লালনপালন, গৃহের অভ্যন্তরের বিভিন্ন কাজ প্রভৃতি। বহির্জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন এই নারীদের ওপর পুরুষদের আধিপত্য অনন্তকাল ধরে চলে আসছে। সমাজে পুরুষরাই আধিপত্য কায়েম করে আসছে এবং তারাই হয়ে উঠেছে এর নিয়ন্ত্রক। লিঙ্গবৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে লিঙ্গ রাজনীতিরও বিকাশ ঘটতে থাকে। অর্থাৎ পিতৃতান্ত্রিক সমাজে পুরুষের প্রাধান্যেই নারীদের জীবনযাপন। পুরুষ তার পৌরুষের দ্বারা নারীকে অবদমিত করে রাখে। সমাজে পিতার বংশধররাই পরিচিতি লাভ করে। সার্বিক দিক দিয়ে বলা যায় যে, পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় নারী জাতি পুরুষের আধিপত্যের বিরুদ্ধে তাদের মর্যাদা ও অধিকারের দাবিতে অষ্টাদশ শতাব্দী থেকে আন্দোলন করে আসছে।

2. ‘রাজনীতি’ কী? রাজনীতির ধারণাটি ব্যাখ্যা করো।

ANS.  ‘রাজনীতি’ ‘রাজনীতি’ (Politics) ও ‘রাষ্ট্রবিজ্ঞান’ (Political Science) শব্দ দুটিকে একসূত্রে সমার্থক বলে অনেকে মনে করলেও এই শব্দ দুটির মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে । গ্রিক পণ্ডিত প্লেটো এবং অ্যারিস্টট্ল রাজনীতি সম্পর্কিত ধারণাটির জন্মদাতা। ইংরেজি Politics শব্দটির সূত্র হল গ্রিক শব্দ ‘Polis’, যার আক্ষরিক অর্থ হল ‘নগর-রাষ্ট্র’ বা ‘City state’ । প্রাচীন গ্রিসে নগর-রাষ্ট্র ছিল সরকারি ব্যবস্থাপনার চর্চাকেন্দ্র, যা ‘রাজনীতি’ (Politics) নামে অভিহিত ছিল। অর্থাৎ প্রাচীন কাল থেকেই রাজনীতি সম্পর্কিত চর্চাকে ‘রাজনীতি’ নামে অভিহিত করা হত। অ্যারিস্টট্ল বলেছিলেন, “মানুষ স্বভাবতই রাজনৈতিক জীব” (Man is by nature a political animal) । একটি রাষ্ট্রের মধ্যেই মানুষ তার পরিপূর্ণতা পেতে পারে।

● রাজনীতি সম্পর্কিত ধারণার ব্যাখ্যা

সাধারণত ‘রাজনীতি’ শব্দটি একটা নির্দিষ্ট সামাজিক চিন্তাধারা এবং তার সুসংবদ্ধ অনুধাবনের ক্ষেত্রে প্রযুক্ত হয়। অ্যারিস্টট্ল তাঁর ‘Politics’ গ্রন্থে রাজনীতিকে একটি আলোচনার অংশ হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন। অ্যারিস্টলের চিন্তাধারাকে কেন্দ্র করেই আধুনিক লেখক ও চিন্তাবিদগণ ‘রাজনীতি’ শব্দটি প্রায়ই ব্যবহার করেছেন । উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, ‘The Elements of Politics’ নামক গ্রন্থে হেনরি সিজউইক, ‘Politics and The Social Sciences’ নামক গ্রন্থে সিস্যুর লিপসেট, ‘A Grammar of Politics’ নামক গ্রন্থে হ্যারল্ড ল্যাস্কি প্রমুখ তাঁদের আলোচনায় রাজনীতিকে এক বিশেষ অনুধাবনযোগ্য বিষয় হিসেবে দেখেছেন । তা ছাড়া প্রথম থেকে ‘আন্তর্জাতিক রাজনীতি’ সম্পর্কিত আলোচনাতেও ‘রাজনীতি’ শব্দটিকে একটি নির্দিষ্ট বিষয়সূচি বলেই ধরে নেওয়া হয়েছে।

● ‘রাজনীতি’র পরম্পরাগত চিন্তাধারা

রাজনীতিকে একটি পরম্পরাগত চিন্তাধারা হিসেবেও দেখা হয়েছে। ‘Modern Politics and Government’ নামক গ্রন্থে অধ্যাপক অ্যালান বল মানুষের একটি ‘প্রাচীনতম কার্যকলাপ’ হিসেবে রাজনীতিকে দেখিয়েছেন । ম্যাকিয়াভেলি রাজনীতি থেকে ধর্ম ও নৈতিকতাকে পৃথক করেছিলেন। এর ফলে ধর্ম ও নৈতিকতা রাজনীতির উদ্দেশ্য সাধন করার একটি উপাদানে পরিণত হয়। ম্যাকিয়াভেলি রাজনীতিকে একটি স্বাধীনসত্তা হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও নৈতিকতার বিচ্ছেদকে তিনি নতুন কোনো মাত্রা দেননি। তাই অনেকে মনে করেন যে, অ্যারিস্টট্ল নয়, ম্যাকিয়াভেলিই ‘রাজনীতি’ শব্দটির উদ্‌গাতা।

● জনভিত্তিক ক্রিয়াকলাপ

রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত কতকগুলি বিষয় যেমন, রাষ্ট্র ও সরকারি ব্যবস্থা, সংগঠন, শাসন-আইন ও জৎ ঠিক তক্ষর বিচার বিভাগ, আমলাতন্ত্র, আরক্ষা বিভাগ প্রভৃতি জনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানসমূহ (Public Institutions) জনস্বার্থ সম্পর্কিত কাজের সঙ্গে যুক্ত । এইসব প্রতিষ্ঠান ‘জনভিত্তিক ক্রিয়াকলাপ’ (Public Affairs)-এর সঙ্গে যুক্ত থেকে রাজনীতিকে প্রভাবিত করে থাকে। অতএব দেখা যায়, সরকারি বিভিন্ন সংস্থা, আইনসভা, ক্যাবিনেট বা সরকারি বিশেষ ব্যক্তিবর্গ, যেমন—মন্ত্রী, আমলা বা সরকারি কর্মচারী প্রমুখ রাজনীতির অংশ । আবার ব্যক্তিগত উদ্যোগসমূহ, বেসরকারি ব্যবসায়ী সংগঠন, গোষ্ঠীভিত্তিক ও জাতিভিত্তিক দল, শ্রমিক সংগঠন, ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও পারিবারিক জীবন প্রভৃতি জনস্বার্থমূলক কাজ করে না, এগুলি কাজ করে কিছু গোষ্ঠীগত স্বার্থের পরিপ্রেক্ষিতে। তাই এগুলিকে জনভিত্তিক ক্রিয়াকলাপের গণ্ডির মধ্যে নির্দিষ্ট করে ধরা যায় না।

● চিন্তাধারার পরিবর্তন

বিশ শতকের গোড়ার দিক থেকে রাজনীতি সম্পর্কে এই ধরনের পরম্পরাগত দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে। আধুনিক কালে চিন্তাবিদগণ রাজনীতিকে একটি জনভিত্তিক ক্রিয়াকলাপমূলক চিন্তাধারা হিসেবে না দেখে একে একটি কার্যসূচক ও ব্যাপক সামাজিক ক্রিয়া হিসেবে দেখার পক্ষপাতী। তাই আধুনিক কালে রাজনীতি হল বৃহত্তর সমাজের একটি ‘প্রক্রিয়া’ (Process) । বর্তমানে রাজনীতির মধ্যে একদিকে যেমন রাষ্ট্র ও সরকারকেন্দ্রিক বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ, তেমনি অন্যদিকে বিভিন্ন সামাজিক আন্তঃসম্পর্কসমূহ যুক্ত হয়ে পড়েছে। এই কারণে অধ্যাপক অ্যালান বল রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপের ভিত্তিকে ‘বৈচিত্র্য’ (Political activity is based on diversity) বলে মনে করেছেন। ‘রাজনীতি’ সংক্রান্ত আলোচনায় তাই সংশ্লিষ্ট হয়ে পড়েছে বিচিত্র ও বিভিন্ন ধরনের মতামত, মতানৈক্য, পরস্পরবিরোধী স্বার্থ, সংঘাত প্রভৃতি।

● ‘রাজনীতি’ সম্পর্কিত ধারণার ক্ষেত্রে সমস্যা

‘রাজনীতি’ বলতে এক বিশেষ ধরনের মানবিক ক্রিয়াকলাপকে বোঝায়। তবে রাজনীতির প্রকৃতিকে উপস্থাপন করার ক্ষেত্রে দুটি সমস্যা বিশেষভাবে দেখা দেয়, যথা—[1] পার্লামেন্ট, ক্যাবিনেট, নির্বাচন প্রভৃতির আলোচনাসমূহ সরকারি ক্ষেত্রে করা হয় বলে এক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। [2] দলীয় রাজনীতির সঙ্গে রাজনীতিকে একাকার করে ফেলার কারণে সমস্যা দেখা দেয়। আর্নেস্ট বেন বলেছেন যে, “সমস্যা সৃষ্টি করার কৌশল হল রাজনীতি । কারণ কোনো সমস্যা দেখা দিক বা না দিক রাজনীতি সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলিকে ভ্রান্তিমূলকভাবে তুলে ধরে এবং এর প্রতিকারের কথা বলে।” তাই সাধারণভাবে মিছিল, জনসভা, রাজনৈতিক স্লোগান, ধর্মঘট প্রভৃতিকে ‘রাজনীতি’ বলে মনে করা ভুল। এই কারণে সাধারণ সমাজে রাজনীতি হল একটি ‘কদর্য ক্রীড়া’।

● ‘রাজনীতি’-র দ্বারা সমস্যাসমাধান

উদারনীতিবাদীরা মনে করেন, রাজনীতি কেবল ‘সমস্যা’ বা ‘সংঘাত’ সৃষ্টিকারী বিষয় নয়—এটি সমস্যার সমাধান এবং সংঘাতের বিলোপ-সাধনকারী বিষয়ও বটে। এই কারণে অধ্যাপক অ্যালান বল লিখেছেন যে, “Political activity is the attempt to reconcile conflicts flowing from diversity.” তবে উল্লেখযোগ্য যে, সমাজে উদ্ভূত সকল বিরোধই ‘রাজনীতি’-র সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। কারণ রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিরোধ কেবল জনভিত্তিক (Public) স্তর থেকে আসতে হবে, যার পরিধি বিস্তৃত রয়েছে স্থানীয় থেকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্র পর্যন্ত ।

■ মন্তব্য : সার্বিক দিক থেকে দেখা যায় যে ‘রাজনীতি’-কে পরস্পর তিনটি বিপরীত মতামত থেকে দেখা যেতে পারে। প্রথমত, কেউ কেউ মনে করেন রাজনীতির কোনো পৃথক অস্তিত্ব নেই; দ্বিতীয়ত, কেউ কেউ মনে করেন রাজনীতি হল এমন একটি স্বাধীন ক্ষেত্র যা পুরোপুরিভাবে প্রাথমিকতা অর্জন করতে সহায়ক হয়েছে এবং তৃতীয়ত, কারও মতে, রাজনীতির তরলীকরণ ঘটেছে বলেই সব কিছুতে রাজনীতিকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়।

…………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

NSOU তে নিশ্চিন্তে পাস করার উপায়

• Maximum NSOU ছাত্রছাত্রীদের একটাই প্রশ্ন ; একটাই ভয় : “পাশ করবো তো? ”
• হ্যাঁ , অবশ্যই পাশ করবেন । সারাবছর পড়ো নি, তাই নিজেকে দুর্বল ভাবার কিছু নেই। এখনও হাতে অনেক সময় আছে। আমরা তো এক্সাম এর 2 দিন আগে পড়তাম , তাতেই 60% নম্বর এনেছিলাম। সেই সময় নোটস, সাজেশন খুব একটা পাওয়া যেত না।
  
• যেভাবে ভয় দূর করবেন?
• প্রথমত নিজের প্রতি আস্থা রাখুন, নিজেকে আগেই মরার আগে মেরে ফেলছন কেনো? জেনে রাখুন, সাজেস্টেড ওয়েতে সাজেস্টিভলি পড়াশনা করলে পাশ করতে বাধ্য । নোটস পড়ার আগে গত ৫ বছরের প্রশ্নপত্রগুলি ঘেঁটে দেখুন, বুঝে জাবেন ।
• মোবাইল এ  সময় টা সব নষ্ট না করে, সময় গুলো  একটু বই পরে, বা সাজেস্টেড সাজেশনের নোটসগুলো একটু রিডিং করুন, কন্সপেট ক্লিয়ার করুন, নিজেকে তৈরী রাখুন।
•  সিলেবাস সম্পর্কে ধারণা নিয়ে যাবেন ।
• যাদের বই নেই, কিন্তু নোটস আছে, নোটস সাজেশন গুলো, মুখস্ত করতে চেষ্টা করুন, খুব বেশি মুখস্ত না হলে, খাতায় লিখে লিখে পড়ুন, দেখবেন, পরীক্ষাতে কিছু হলেও লিখে আসতে পারবেন।
• শুধু পরলেই হবে না, সাথে মার্ক করুন  কোন কোন পয়েন্ট গুলো, মনে রাখতে হবে।
• এক্সাম হল-এ সবাই নার্ভাস ফিল করেন, এটাই খুব স্বাভাবিক, কেউই বিদ্যাসাগর নয়, ম্যক্সিমাম স্টুডেন্ট ঠিক আপনার মতই নার্ভাস থাকবে, তাই ভয় পাওয়ার কোনো কারন নেই , নিজের প্রতি ভরসা রাখুন আর ফাটিয়ে লিখে আসুন ।
• কোনো প্রশ্নের উত্তর পারবো না বলে ছেড়ে আসবেন না, যেটুকু পারবেন, সেই টুকুই ২-৪ লাইন লিখে আসুন।  মনে রাখবেন ব্ল্যঙ্ক পেজ রেখে আসবেন না।।
• স্যার তো চাইবেন আপনাকে নাম্বর দিতে কিন্তু আপনি কিছু না লিখে আসলে , কিভাবে আপনাকে নাম্বর দেবেন বলুন ? কিন্তু তাই বলে, গরুর রচনা তে নদীর রচনা লিখে এলে নিশ্চয় নম্বর পাবেন না। যে টপিক থাকবে, সেই টপিকি কিছু লিখে আসবেন।

Example > ম্যাকবেথ নিয়ে যেকোনো প্রশ্ন এলে, ম্যাকবেথ এর মূল ভাবটা যা জানেন তাই লিখে আসবেন,

বা ধরুন = সাহিত্য নিয়ে কোনো প্রশ্ন এলে, সেই টপিক অনুযায়ী যা জানেন তাই লিখে আসবেন, মোট কথা কোনো প্রশ্ন একটুও যদি আপনি জেনে থাকেন , খালি রেখে আসবেন না । ফর সিওর পাস আপনি  করবেই করবেন ।

• পরীক্ষার আগে, নিজেকে একটু সময় দিতে হবে, 2 দিন না হলে একদিন, দেখুন সারাজীবন-ই তো কাজ আর কাজ থাকবেই, তার মধ্যে আপনি যদি সময় বের করতে না পারেন, তাহলে তো আফসোস করতেই হবে আপনাকে এক্সাম হল-এ, তাইনা?  সবটা সবার উপর ছেড়ে দিতে নেই। নিজেও একটু পড়তে হবে।
• শেষকথা, প্রস্তুতি নিন, নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন, প্রতিদিন সামান্য হলেও পড়ুন, আর  সাজেশন গুলো ভালো করে ফলো করে যান । ফর সিওর পাস আপনি  করবেই করবেন ।

নোটস মুখস্ত করার টিপস

 ১। সম্পূর্ণ অনুচ্ছেদটি বারবার পড়ার উপর জোর দেওয়া:

আমাদের একটি বড্ড বাজে অভ্যাস রয়েছে, আমরা কী পড়লাম তার থেকে কতটুকু সময় পড়েছি তার উপর বেশী জোর দেই। ধরা যাক আজ সকালে উঠে আমি একটানা পাঁচ ঘণ্টা পড়েছি কিন্তু আসলেই কি সম্ভব একটানা পাঁচ ঘন্টা পড়া? টানা পাঁচ কেন দুই ঘণ্টাই মনোযোগ ধরে রাখা কিন্তু চাট্টিখানি কথা না, একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে পাঁচ ঘন্টার মাঝে কতবার আমাদের মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটেছে। হয়তো পড়ার মাঝেই আমাদের ফেসবুকের নোটিফিকেশন চেক করছি, মেইল চেক করছি, কিংবা ইউটিউবে ঢুকে বসে আছি। এভাবে ২-৩ ঘণ্টা পড়ার পর ভাবছি আজ না জানি কত বেশি পড়ে ফেললাম। অথচ এই সময়টুকুতে যতোটুকু পড়া যেতো তা কিন্তু হয় নি।

কোন টপিক শিখতে কত সময় পড়লাম সেটা কখনোই মুখ্য বিষয় নয়, বরং টপিকটি আমি কয়বার ভালোভাবে বুঝে পড়েছি সেটাই মুখ্য বিষয়।

সুতরাং, পড়তে বসার সময় কোন টপিক মুখস্থ করার জন্য কোন নির্ধারিত সময় ফিক্সড না করে বরং টপিকটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত লাইন বাই লাইন কয়েকবার পড়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। একটা দাঁতভাঙ্গা অনুচ্ছেদ প্রথমবার পুরোটা পড়লে যতটুকু কঠিন মনে হবে দ্বিতীয়বার পড়লে তুলনামূলক কম কঠিন মনে হবে। সুতরাং যতবার পুনরায় পড়া হবে ততোটাই সহজ মনে হবে।

২। অনুচ্ছেদটিকে ভেঙ্গে ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত করে পয়েন্ট আউট করে ফেলা:

টপিকটি সম্পূর্ণ লাইন বাই লাইন পড়া হয়ে গেলে যে সকল বাক্যগুলো দুর্বোধ্য সেগুলো আন্ডারলাইন করে ফেলতে হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো বের করে নিয়ে আসতে হবে। একেকটি পয়েন্ট একটি শব্দ কিংবা একটি ছোট বাক্যের সমন্বয়ে তৈরি হতে পারে। পয়েন্ট আউট করাটা অবশ্যই বুদ্ধিমত্তার সাথে করতে হবে যেন একবার পড়ার সাথে সাথেই টপিকটির একটি বিশেষ অংশ মাথায় ঘোরা শুরু করে।

৩। মার্কার পেন ব্যবহার করা

কেউ কেউ ঝকঝকে বই ভালবাসেন আবার অনেকেই লাল নীল রঙ্গে বই ফুটিয়ে তোলেন। তবে আমাদের মধ্যে বেশিরভাগই মার্ক করে বা দাগিয়ে পড়তে ভালবাসেন। এটাও পড়া মনে রাখতে বেশ কার্যকর। গুরুত্বপূর্ণ অংশটুকু চিহ্নিত করার ফলে কোন শব্দ বা বাক্যের প্রতি আকর্ষণ ও আগ্রহ বেড়ে যায়। সেই সাথে ঐ অংশটুকুর উপর ব্রেইণের ভিজ্যুয়ালিটি ইফেক্টও বেড়ে যায় যা পড়াকে মনে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা করে।

৪। বেশি বেশি পড়া ও অনুশীলন করা

পড়া মুখস্ত করার জন্য শুধু পড়লেই হবে না, লিখতেও হবে বারবার। মানুষের ব্রেইন ক্ষণস্থায়ী স্মৃতি গুলোকে ঠিক তখনই দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিতে পরিণত করে যখন সেটা বার বার ইনপুট দেয়া হয়।

একই জিনিস বারবার ইনপুট দেওয়ার ফলে ব্রেইণ তার স্মৃতি গঠনের স্থানে একটি গাঠনিক পরিবর্তন আনে, যা দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি তৈরীতে সাহায্য করে। সুতরাং পড়া মনে রাখার অন্যতম উপায় হলো বেশি বেশি পড়া ও অনুশীলন করা।

৫। পড়ার জন্য সঠিক সময় নির্বাচন

প্রায় অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রীর ধারণা সারাদিন-সারারাত পড়লেই পড়া বেশি মনে থাকে। এটা নিতান্তই একটা ভুল ধারণা। এর কারণ হলো সবসময় আমাদের ব্রেইন একইভাবে কাজ করতে সক্ষম হয় না। তবে পড়ার জন্য একটা রুটিন বানানো উচিৎ । 

অবশেষে বলবো পড়াশনাটা আপনাকেই করতে হবে তাই আপনার সময় মতো পড়াশনার রুটিন বানিয়ে পড়াশনা শুরু করুন, সময় খুবই কম । যত তাড়াতাড়ি আপনি পড়াশনা শুরু করবেন তত এগিয়ে থাকবেন।

“মনে রাখবেন “সময় একটি শব্দ মাত্র যেটি চলে গেলে কখনই ফিরে আসে না ।

 And Your Time Start NOW ! ”

…………………………………………………………………………………………………………..

CONTACT // WHATSD APP – 8479091027

message me : https://wa.me/918479091027

EMAIL. malymaity94@gmail.com

CHECK OUT THE PLATFORM:

TO VISIT MY BLOG LINK :https://mminstitution.blogspot.com/​​​​​

👉 👉 Subscribe MY YouTube Channel :- http://www.youtube.com/c/MMINSTITUTIO…

👉 👉 Join 📚 MM INSTITUTION📚 FACEBOOK Group 2️⃣ :-

https://www.facebook.com/groups/20444…

👉👉join my telegram group:

https://t.me/mm_instituti​​​​​

👉👉join my Facebook page:

https://www.facebook.com/nsouhelp