UG CC-ED-01 SAMPL NOTE – MM INSTITUTION

MM INSTITUTION

👇DOWNLOAD UG SAMPLENOTE (CC-ED-01) 👇

1. শিক্ষার ধারণা বলতে কী বোঝ?

উত্তর ‘ধারণা’ কথাটির ইংরাজী প্রতিশব্দ হল ‘Concept’. সাধারণভাবে ধারণা বলতে বোঝায় কোন বস্তু বা ব্যক্তি সম্পর্কে সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি। যেমন— আমরা যদি বলি পাখি, তাহলে আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে পাখির সাধারণ বৈশিষ্ট্য। যেমন— পাখির দুটি পা, ডানা ও চোখ আছে এবং পালক ও ঠোঁট আছে। আবার যদি বলি টেবিল তাহলে টেবিলের সাধারণ বৈশিষ্ট্য যেমন— কাঠের তৈরী চার পা বিশিষ্ট একটি বস্তু। তাহলে আমরা দেখতে পাচ্ছি বিভিন্ন বস্তু বা ব্যক্তির আলাদা আলাদা কোন বৈশিষ্ট্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা যা পাই তাই হল ধারণা [Concept].

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, মনিষী ও দার্শনিকগণ শিক্ষা সম্বন্ধে যা কিছু বলেছেন— সেগুলিকেই শিক্ষার ধারণা [Concept of Education] বলা যেতে পারে। সাধারণভাবে বলা যেতে পারে শিক্ষা হল শিশুর আচরণের কাম্য পরিবর্তন সাধনের প্রক্রিয়া। আচরণে বাঞ্ছিত পরিবর্তন হল শিক্ষা। শিক্ষার মাধ্যমেই মানুষ পরিপূর্ণ জীবনের অধিকারী হয়, ব্যক্তি মানুষের আত্মবিকাশ হয় এবং ব্যক্তি ও সমাজকে সভ্যতার পথে অগ্রসর হতে সাহায্য করে।

বিশিষ্ট চিন্তাবিদ গোয়েটিং বলেছেন— “Just as there are certain vital process of life in a biological sense, so eduction may be considered as a vital process in a social sense.”

বিভিন্ন যুগে এবং বিভিন্ন দেশে শিক্ষাবিদ দার্শনিকগণ, ‘শিক্ষা’ শব্দটির তাৎপর্য্য বিশ্লেষণ করেছেন। এই বিশ্লেষণগুলি থেকে শিক্ষার কোন একক ধারণা পাওয়া যায় না। সমাজের বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই ধারণারও বিবর্তন হয়েছে। এবং ক্রমে তা পরিবর্তন ও পরিবর্ধন হয়ে চলেছে। অর্থাৎ শিক্ষার ধারণা স্থির নয়, তা পরিবর্তনশীল। সুতরাং শিক্ষা হল— Dynamic variable concept.

যুগে যুগে মনিষীদের শিক্ষার ধারণাগুলিকে বিশ্লেষণ করে বলা যায়—

(ক) জ্ঞান অর্জনই হল শিক্ষা।
(খ) অভাব পূরণের প্রচেষ্টাই হল শিক্ষা। (Education is to achieve the fullest satisfaction of the wants of the mankind).- Gate
(গ) জীবনের ক্রমোন্নতি এবং ক্রমবিকাশই শিক্ষা।
(ঘ) অতীত অভিজ্ঞতার স্বার্থক সংরক্ষণ, সঞ্চালন, উন্নয়ন, অনুশীলন ও রূপায়ন হল শিক্ষা।
(ঙ) সুপরিকল্পিত পরিণতি প্রত্যাশী আদর্শাভিমুখী বৃদ্ধিই হল শিক্ষা। (Education is growth in the right way). – Horne
(চ) শিক্ষা ব্যক্তি ও সমাজকে সভ্যতার পথে অগ্রসর করে দেয়।
(ছ) শিক্ষার মাধ্যমে সমাজ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য গড়ে উঠে।
(জ) শিক্ষা হল জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া (Education is a life-long process)।
(ঝ) জীবনযাপনের প্রস্তুতিই শিক্ষা।
(ঞ) “Education is the natural progressive and harmonious development of all the power of man – Physical, Intellectual and moral”Pestalozzi ।

● শিক্ষা হল পরিবেশের সঙ্গে সার্থক সঙ্গতিবিধান, ব্যক্তি ও পরিবেশের মধ্যে পারস্পরিক ক্রিয়া, প্রতিক্রিয়ার ফল হল শিক্ষা। (“Education is the product of interaction)

● আত্মপ্রচেষ্টার মাধ্যমে সামঞ্জস্যবিধান ও পরিপূর্ণ আত্মবিকাশের নামই শিক্ষা।

● মানবজাতির সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের সঙ্গে পরিচিতিই শিক্ষা।

● জীবনযাপনের প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনই শিক্ষা।

● সমাজের প্রগতির উন্নয়ন কল্যাণ সাধনের জন্য চেতনা জাগায় শিক্ষা।

◉ শিক্ষা সম্পর্কে ভারতীয় ধারণা : প্রাচীন ভারতবর্ষের বিভিন্ন গ্রন্থ ও বহু বিশিষ্ট চিন্তাবিদদের মতানুসারে শিক্ষার একাধিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। যেমন-

প্রাচীন ভারতীয় শাস্ত্র গীতা-য় উল্লেখ করা আছে- “ন হি জ্ঞানেন সদৃশ্য পবিত্ৰমিহ বিদ্যতে।” —জ্ঞানের মতো বিশুদ্ধ আর কিছুই নেই।

ঋক্‌বেদ-এ বলা হয়েছে—শিক্ষা হল এমন একটি প্রক্রিয়া যা মানুষকে আত্মবিশ্বাস ও আত্মত্যাগী হতে উদ্বুদ্ধ করে।

প্রাচীন বৈদিক যুগে শিক্ষাকে মনে করা হত আত্ম নির্ভরশীল করা ও আত্মকামনা ত্যাগ করার উপায় মাত্র। (“Education is something which makes a man self-reliant and self-less”)

ঔপনিষদে বলা হয়েছে—শিক্ষা মানুষকে সংস্কারমুক্ত করে বা সকল দিক থেকে বস্তু জগতের বন্ধনমুক্তির আনন্দ দেয় (সা বিদ্যা যা বিমুক্তয়ে)।

বিশিষ্ট চিন্তাবিদ কণ্বাদ বলেছেন, শিক্ষার প্রভূত তাৎপর্য এই যে, এর মাধ্যমে মানুষের আত্মসন্তুষ্টির (Self contenment) যথার্থ আদর্শ দিকে বিকাশ ঘটানো সম্ভব হয়।

প্রাচীন ভারতীয় চিন্তাবিদ যাজ্ঞবল্ক্য বলেছেন, শিক্ষা হল তাই যা মানুষকে সৎ চরিত্রের অধিকারী করে এবং বিশ্বের কাছে গ্রহণযোগ্য বা প্রয়োজনীয় করে তোলে। *বিশিষ্ট চিন্তানায়ক কৌটিল্যের মতে, শিক্ষা হল ব্যক্তিকে তার দেশ বা জাতিকে ভালোবাসার প্রশিক্ষণ দেওয়ার কৌশল মাত্র।

বিশিষ্ট ধর্মগুরু আদি শঙ্করাচার্য মনে করতেন, আত্মোপলব্ধিই (Self realization) হল শিক্ষা। উল্লিখিত প্রাচীন ভারতীয় চিন্তাবিদ্‌গণের শিক্ষা সম্পর্কিত ধারণাগুলির মধ্যে যে সাধারণ বৈশিষ্ট্য পাওয়াযায়— সেটি হল প্রত্যেকেই শিক্ষাকে কোন বিশেষ ব্যক্তিগত গুণ বা বৈশিষ্ট্য অর্জনের পন্থা বলে মনে করেন।

◉ শিক্ষা সম্পর্কে পাশ্চাত্য চিন্তাবিদদের মতামত :পাশ্চাত্য দেশগুলিতে সমাজব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষা শব্দের যথেষ্ট পরিবর্তন হয়েছে। কয়েকজন বিশিষ্ট পাশ্চাত্য মনিষী ও চিন্তাবিদ্‌ নিজ নিজ আদর্শ ও ভাবধারার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষাকে বিভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। যেমন—

● প্রাচীন দার্শনিক প্লেটো বলেছেন, “It develops in the body and soul of the pupil all the beauty and all the perfection he is capable of” (শিশুর নিজস্ব ক্ষমতা অনুযায়ী দেহ ও মনের সার্বিক বিকাশ ঘটায় শিক্ষা।)

● প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ অ্যাডাম্স (Adams) বলেছেন, “Education is a conscious deliberate pro- cess in which one personality acts upon another in order to modify the development of other by the communication and manipulation of knowledge” (শিক্ষা হল এমন একটি সচেতন ও ঐচ্ছিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে এক ব্যক্তি অপর আর এক ব্যক্তির উপর প্রভাব বিস্তার করে তার কিছু আচরণগত পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়।)

● প্রয়োগবাদী দার্শনিক জন ডিউই বলেছেন, “শিক্ষা হল পরিপূর্ণ জীবন বিকাশের প্রক্রিয়া।”

◉ থম্পসন (Thompson) বলেছেন, “শিক্ষা হল এমনই এক পরিবেশগত প্রভাব যা কোন ব্যক্তিকে তার অভ্যাস, আচরণ, চিন্তা এবং মনোভাবের স্থায়ী পরিবর্তনে সহায়তা করে”।

● দার্শনিক অ্যারিস্টটল (Aristotle) বলেছেন, -“Education is the creation of sound mind in a sound body. It develops man’s faculty, especially his mind, so that he may be able to enjoy the contemplation of supreme truth, goodness and beauty in which perfect happi- ness essentially consists.” (শিক্ষা দেহ মনের সুষম এবং পরিপূর্ণ বিকাশের মাধ্যমে ব্যক্তিকে জীবনের প্রকৃত মাধুর্য এবং চরম সত্য উপলব্ধিতে সহায়তা করে।)

● নান বলেছেন “ব্যক্তির নিজস্বতার পরিপূর্ণ বিকাশ হল শিক্ষা। যার মাধ্যমে ব্যক্তি তার নিজস্ব ক্ষমতা অনুযায়ী মানবজীবনে মৌলিক অবস্থান রাখতে পারে”।

● রেমন্ট বলেছেন, “শিক্ষা হল মানুষের শৈশবকাল থেকে পরিণত বয়স পর্যন্ত জীবনবিকাশের এক প্রক্রিয়া এবং এই প্রক্রিয়ায় সে ক্রমশ তার প্রাকৃতিক, সামাজিক, আত্মিক পরিবেশের সঙ্গে সংগতি বিধানে সমর্থ হয়”।

● ফ্রয়েবল বলেছেন, “শিক্ষা হল সেই বিপন্ন প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে ব্যক্তি প্রকৃতির রাজ্যে নিজের বিস্তৃতি ঘটায় ও মানবসমাজের সঙ্গে নিজেকে একাত্ম করে”।

আধুনিক যুগে শিক্ষা হল ভবিষ্যত জীবনের প্রস্তুতি। অথবা শিক্ষা হল জীবন, জীবন হল শিক্ষা। বিভিন্ন যুগে শিক্ষার পৃথক ধারণার উদ্ভব ঘটলেও শিক্ষা জীবনের ক্ষেত্রে কতটা প্রয়োজনীয় তা নিয়ে সন্দেহ নেই। ব্যক্তির আত্মকেন্দ্রিকতা যদি তার মনোভাবকে প্রভাবিত করে, তা সম্বন্ধে তার ধারণা সমাজের পক্ষে ভালো হবে না। ব্যক্তি সমাজসচেতন হলে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা যাবে সকলকে।

2. শিক্ষার সংজ্ঞা দাও এবং শিক্ষার আধুনিক ধারণা আলোচনা কর।অথবা, শিক্ষা বলতে কী বোঝায় ? শিক্ষা শব্দের অর্থ উল্লেখ করে বর্তমানে যে অর্থে শব্দটি ব্যবহার করা হয়, সেই সম্পর্কে আলোচনা কর।

উত্তর: শিক্ষার সংজ্ঞা : শিক্ষাবিদগণ শিক্ষার সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অভিমত ব্যস্ত করেছেন। তাই শিক্ষার কোন সর্বজনগ্রাহ্য, সুনির্দিষ্ট, বাক্যবন্ধের সংজ্ঞা নির্দেশ করা সম্ভব নয়। সাধারণভাবে বলা যায়, যে প্রক্রিয়ায় শিশুর আচরণে বাঞ্ছিত পরিবর্তন এনে শিশুকে জীবনচর্যায় সক্ষম করে, সৃজনশীল করে, সর্বোপরি সর্বাঙ্গীন বিকাশের মাধ্যমে ‘মানুষ’ করে তাই হল ‘শিক্ষা’।

‘শিক্ষা’ শব্দটির সাধারণ অর্থ হল—জীবনের উপযোগী কিছু কৌশল আয়ত্ত করা। ‘শিক্ষা’ শব্দের অর্থ খুঁজতে গেলে দেখা যায়, ‘শিক্ষা’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত ‘শাস্’ ধাতু থেকে। যার অর্থ হল ‘শাসন করা’, ‘শৃঙ্খলাবন্দ করা’, ‘নিয়ন্ত্রণ করা’, ‘শিক্ষা দেওয়া’ বা ‘নির্দেশনা দেওয়া’। এখানে শিক্ষা শব্দের অর্থ হল প্রচলিত শিক্ষাদান পদ্ধতি। আবার অনেক সময় বাংলা ভাষার সমার্থক শব্দ হিসাবে ‘বিদ্যা’ শব্দ ব্যবহার করা হয়। বিদ্যা’ শব্দ এসেছে ‘বিদ’ ধাতু থেকে। যার অর্থ হল ‘জ্ঞান অর্জন করা বা জানা’। মানবজীবনের প্রথম দিনটি থেকে শেষদিন পর্যন্ত সে শুধু শিখেই চলে। তাই শিক্ষা জীবনের আবশ্যিক অঙ্গ। শিক্ষা ও বিদ্যা দুটি মানুষের সামগ্রিক জীবনের বিকাশ সম্পর্কে ব্যবহার করা হয়। তাই ‘শিক্ষার’ ইংরেজী প্রতিশব্দ হল ‘Education ।

ইংরেজী ‘Education’ শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ভাষাবিদেরা তিনটি ল্যাটিন শব্দের উল্লেখ করেছেন।

একটি মতবাদ অনুযায়ী ‘Education’ শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ- ‘Educare’ থেকে। যার অর্থ হল প্রতিপালন করা, পরিচর্যা করা (to bring up, to nourish, to rear up) অর্থাৎ শিশুকে পরিচর্যা করে জীব গঠনে উপযোগী করে গড়ে তোলা।

অন্য আর এক মতবাদ অনুযায়ী ‘Education’ শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘Educare’ থেকে। যার অর্থ হল ভেতর থেকে বাইরে নিয়ে আসা, নির্দেশনা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। (to draw out, to lead out) অর্থাৎ শিশুর ভেতরে সুপ্ত সম্ভাবনাগুলিকে নির্দেশনা দিয়ে বাইরে নিয়ে আসা।

তৃতীয় ল্যাটিন শব্দটি হল ‘Educatum’ যা থেকে ‘Education’ শব্দটির উৎপত্তি। এর অর্থ হল “The act of teaching’ অর্থাৎ শিক্ষাদান প্রক্রিয়া।

শুধুমাত্র স্কুল কলেজের মধ্যে শিক্ষা কখনও আবদ্ধ থাকে না। এই অর্থে শিক্ষা হল a continuous life long process এই প্রসঙ্গে শিক্ষার দুটি অর্থ সম্পর্কে কতগুলি তত্ত্ব ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন। কারণ তাতে ‘শিক্ষা” সম্পর্কে ধারণা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে।

• সংকীর্ণ অর্থে শিক্ষার দুটি তত্ত্ব :সংকীর্ণ অর্থে শিক্ষা বলতে যে কোন প্রকার জ্ঞান অর্জন, তথ্য সংগ্রহ বা কৌশল আয়ত্ত করাকে বোঝায়। অর্থাৎ যে শিক্ষাধারায় শিক্ষার্থীর ব্যক্তিত্বের সর্বাঙ্গীন বিকাশের উপর গুরুত্ব না দিয়ে শুধুমাত্র গুরু নির্দেশিত জ্ঞানচর্চার উপরে গুরুত্ব আরোপ করা হয়, শিক্ষক শিক্ষার্থীর সম্পর্ক যেখানেশুধু দান বা গ্রহীতার সম্পর্ক বলয়ে সীমাবদ্ধ— সেই গুরুকেন্দ্রিক বা শিক্ষককেন্দ্রিক শিক্ষাধারাকেই শিক্ষার সংকীর্ণ অর্থ বলে চিহ্নিত করা হয়। সংকীর্ণ অর্থে শিক্ষা হচ্ছে একপ্রকার পারদর্শিতা অর্জন।

শিক্ষা মতবাদগুলির মধ্যে ‘আহরণ তত্ত্ব’ (education by accretion) সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য। যা সংকীর্ণ অর্থে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই মতবাদ অনুসারে শিক্ষা জ্ঞান বা তথ্য আহরণের পদ্ধতিমাত্র। অর্থাৎ শিশুমনের মূল্যভাণ্ডার নানা বিষয়ক জ্ঞান দ্বারা পরিপূর্ণ করাই শিক্ষার কাজ। তাই শিক্ষা হল জ্ঞানার্জনের নামান্তর।

শিক্ষা সংক্রান্ত আরেকটি তত্ত্ব ‘মানসিক উৎকর্ষণ তত্ত্ব’ (Theory of mental disciplining) তত্ত্বটির অর্থ হল-পাঠ্যক্রমের অনুশীলনের মাধ্যমে শিশুর মনটিকে তৈরী করা, শিশুর মনকে একটি জটিল যন্ত্রের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। যন্ত্রের যেমন বিভিন্ন অংশ থাকে, তেমনি শিশুমনেরও বিভিন্ন অংশ রয়েছে। যেগুলিকে বলা হয় Mental faculty, যেমন— স্মৃতিশক্তি, যুক্তিশক্তি, চিন্তাশক্তি ইত্যাদি। এক একটি পাঠ্যবিষয়ের চর্চার মাধ্যমে শিশুর এক একটি মানসিক শক্তিকে বাড়িয়ে তোলা যায়। শিক্ষা সংক্রান্ত এই মতবাদকে বলা হয় Theory of Formal Discipline ।

• ব্যাপক অর্থে শিক্ষা :ব্যাপক অর্থে শিক্ষা হল জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কোন ব্যক্তি বিভিন্ন পরিস্থিতিতে যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে, তাই হল শিক্ষা। ব্যাপক অর্থে শিক্ষা, জ্ঞান সংগ্রহের কৌশল নয়, বৃহত্তর জীবন বিকাশের প্রক্রিয়া। অর্থাৎ শিক্ষকতার আন্তনির্হিত সৃষ্টিশীল সম্ভাবনার পরিপূর্ণ বিকাশ।

অর্থাৎ আত্মশক্তি ও জীবন পরিবেশের ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে ব্যক্তি অভিজ্ঞতা লাভ করে, পূর্ব অভিজ্ঞতার সঙ্গে নতুন নতুন অভিজ্ঞতার সংযোজন হয়, অভিজ্ঞতার পুনর্গঠন ও পুনর্বিন্যাস হয়ে থাকে। এই নতুন অভিজ্ঞতালাভ ও অভিজ্ঞতার পূর্ণ গঠনকে, সহজাত শক্তি সম্ভাবনার পরিবর্তন পরিমার্জন ও উৎকর্ষকে পরিবেশের মাধ্যমে ব্যক্তির পরিপূর্ণ আত্মবিকাশই হল ব্যাপক অর্থে শিক্ষা।

ব্যাপক অর্থে শিক্ষার এই আলোচনা মনোবিদ্যা ও সমাজবিদ্যার বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত। তাই ব্যাপক অর্থে— • শিক্ষা হল শিশুর জৈব, মানসিক, সামাজিক সর্বপ্রকার বা সর্বাঙ্গীণ বিকাশ সাধন। • অভিজ্ঞতা অর্জন, আত্মপ্রচেষ্টার মাধ্যমে সামঞ্জস্য বিধান ও পরিপূর্ণ আত্মবিকাশের নামই শিক্ষা। • শিক্ষা হল এমন একটি প্রক্রিয়া যা শিশুকাল থেকে পরিণত বয়স পর্যন্ত পরিব্যাপ্ত এবং যা ব্যক্তিকে বিভিন্ন পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গতিবিধান ও অভিজ্ঞতা অর্জনে সাহায্য করে।

এছাড়া Education শব্দকে বিশ্লেষণ করলে শিক্ষা সম্বন্ধে কিছু ধারণা পাওয়া যায়।

E → Ethics of life (আদর্শ জীবনদর্শন)

D → Democratic Attitude (গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গী)

U → Unfoldment ( প্রকাশ করা)

C → Character (চরিত্র)

A → Adaptibility (সংগতিসাধন করা)

T → Truthfulness (সত্যবাদীতা)

I → Impartiality (পক্ষপাতশূন্য)

O → Open mindedness (খোলামন) N → Novelty (নতুনত্ব)

• শিক্ষার আধুনিক ধারণা :আধুনিককালে পাশ্চাত্যের বিভিন্ন চিন্তাবিদ তাঁদের নিজস্ব আদর্শ ও দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী শিক্ষাকে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। স্বামী বিবেকানন্দ শিক্ষা সম্বন্ধে বলেছেন, শিক্ষা হল মানুষের অন্তর্নিহিত সত্ত্বার পরিপূর্ণ বিকাশ। (Education is the manifestation of perfection already in man) তিনি আরও বলেছেন, শিক্ষা তথ্যের পরিমাণ নয়, যাকে মস্তিষ্কে প্রবেশ করিয়ে একটা বিপর্যয় সৃষ্টি করতে হবে, কিংবা সারাজীবন আয়ত্তাধীন ও অপ্রয়োজনীয় হিসাবে রাখা যাবে।

শিক্ষা ও তথ্য যদি এক হত তবে এই পৃথিবীতে পাঠাগার ও বিশ্বকোষকেই বলা হত শ্রেষ্ঠ মুনিঋষি।

(“Education is not the amount of information that is put into your brain and runs riot their undigested all your life. If education is identecal with information, the lybraries would be a greatest sage in the world and encyclopedia the rishes.”

জাতির জনক মহাত্মা গান্ধি বলেছেন, ব্যক্তি, দেহ, মন ও আত্মার সুষম বিকাশের প্রয়াস হল শিক্ষা। (“By education I mean an alround drawing out of the best in child and man body, mind and spirit”)

বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন (University Education Commission) (1948) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “Education, according to Indian tradition, is not merely a means to earning a living nor it is only a nursery of thought or a school for citizenship. It is initiation into the life of spirit, a training of human sould in the persuit of truth and the practice of virtue. It is second birth——dvitiyam Janma.”

(শিক্ষা কথার প্রকৃত তাৎপর্য্য জীবিকা অর্জনের বা নাগরিকতার প্রশিক্ষণের গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। শিক্ষা হল দ্বিতীয় জন্ম। উন্নততর আধ্যাত্মময় জীবনে প্রবেশের প্রথম সোপান)

বর্তমানকালে ‘শিক্ষা’ বলতে আধুনিক শিক্ষাবিদদের মতামতকে অনেক বেশী গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়। কারণ— আধুনিক শিক্ষা হল শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিক্ষা। আধুনিক শিক্ষার লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীর অন্তর্নিহিত সম্ভাবনার পরিপূর্ণ বিকাশ। শিক্ষণ পদ্ধতি হল শিক্ষার্থীদের সক্রিয়তাভিত্তিক কৌশল। শিক্ষার্থীদের চাহিদাভিত্তিক অভিজ্ঞতা অর্জনই এখানে বড়ো কথা।

…………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

NSOU তে নিশ্চিন্তে পাস করার উপায়

Maximum NSOU ছাত্রছাত্রীদের একটাই প্রশ্ন ; একটাই ভয় : “পাশ করবো তো? ”
হ্যাঁ , অবশ্যই পাশ করবেন । সারাবছর পড়ো নি, তাই নিজেকে দুর্বল ভাবার কিছু নেই। এখনও হাতে অনেক সময় আছে। আমরা তো এক্সাম এর 2 দিন আগে পড়তাম , তাতেই 60% নম্বর এনেছিলাম। সেই সময় নোটস, সাজেশন খুব একটা পাওয়া যেত না।
যেভাবে ভয় দূর করবেন?
প্রথমত নিজের প্রতি আস্থা রাখুন, নিজেকে আগেই মরার আগে মেরে ফেলছন কেনো? জেনে রাখুন, সাজেস্টেড ওয়েতে সাজেস্টিভলি পড়াশনা করলে পাশ করতে বাধ্য । নোটস পড়ার আগে গত ৫ বছরের প্রশ্নপত্রগুলি ঘেঁটে দেখুন, বুঝে জাবেন ।
মোবাইল এ সময় টা সব নষ্ট না করে, সময় গুলো একটু বই পরে, বা সাজেস্টেড সাজেশনের নোটসগুলো একটু রিডিং করুন, কন্সপেট ক্লিয়ার করুন, নিজেকে তৈরী রাখুন।
সিলেবাস সম্পর্কে ধারণা নিয়ে যাবেন ।
যাদের বই নেই, কিন্তু নোটস আছে, নোটস সাজেশন গুলো, মুখস্ত করতে চেষ্টা করুন, খুব বেশি মুখস্ত না হলে, খাতায় লিখে লিখে পড়ুন, দেখবেন, পরীক্ষাতে কিছু হলেও লিখে আসতে পারবেন।
শুধু পরলেই হবে না, সাথে মার্ক করুন কোন কোন পয়েন্ট গুলো, মনে রাখতে হবে।
এক্সাম হল-এ সবাই নার্ভাস ফিল করেন, এটাই খুব স্বাভাবিক, কেউই বিদ্যাসাগর নয়, ম্যক্সিমাম স্টুডেন্ট ঠিক আপনার মতই নার্ভাস থাকবে, তাই ভয় পাওয়ার কোনো কারন নেই , নিজের প্রতি ভরসা রাখুন আর ফাটিয়ে লিখে আসুন ।
কোনো প্রশ্নের উত্তর পারবো না বলে ছেড়ে আসবেন না, যেটুকু পারবেন, সেই টুকুই ২-৪ লাইন লিখে আসুন। মনে রাখবেন ব্ল্যঙ্ক পেজ রেখে আসবেন না।।
স্যার তো চাইবেন আপনাকে নাম্বর দিতে কিন্তু আপনি কিছু না লিখে আসলে , কিভাবে আপনাকে নাম্বর দেবেন বলুন ? কিন্তু তাই বলে, গরুর রচনা তে নদীর রচনা লিখে এলে নিশ্চয় নম্বর পাবেন না। যে টপিক থাকবে, সেই টপিকি কিছু লিখে আসবেন।

Example > ম্যাকবেথ নিয়ে যেকোনো প্রশ্ন এলে, ম্যাকবেথ এর মূল ভাবটা যা জানেন তাই লিখে আসবেন,

বা ধরুন = সাহিত্য নিয়ে কোনো প্রশ্ন এলে, সেই টপিক অনুযায়ী যা জানেন তাই লিখে আসবেন, মোট কথা কোনো প্রশ্ন একটুও যদি আপনি জেনে থাকেন , খালি রেখে আসবেন না । ফর সিওর পাস আপনি করবেই করবেন ।

পরীক্ষার আগে, নিজেকে একটু সময় দিতে হবে, 2 দিন না হলে একদিন, দেখুন সারাজীবন-ই তো কাজ আর কাজ থাকবেই, তার মধ্যে আপনি যদি সময় বের করতে না পারেন, তাহলে তো আফসোস করতেই হবে আপনাকে এক্সাম হল-এ, তাইনা? সবটা সবার উপর ছেড়ে দিতে নেই। নিজেও একটু পড়তে হবে।
শেষকথা, প্রস্তুতি নিন, নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন, প্রতিদিন সামান্য হলেও পড়ুন, আর সাজেশন গুলো ভালো করে ফলো করে যান । ফর সিওর পাস আপনি করবেই করবেন ।

নোটস মুখস্ত করার টিপস

১। সম্পূর্ণ অনুচ্ছেদটি বারবার পড়ার উপর জোর দেওয়া:

আমাদের একটি বড্ড বাজে অভ্যাস রয়েছে, আমরা কী পড়লাম তার থেকে কতটুকু সময় পড়েছি তার উপর বেশী জোর দেই। ধরা যাক আজ সকালে উঠে আমি একটানা পাঁচ ঘণ্টা পড়েছি কিন্তু আসলেই কি সম্ভব একটানা পাঁচ ঘন্টা পড়া? টানা পাঁচ কেন দুই ঘণ্টাই মনোযোগ ধরে রাখা কিন্তু চাট্টিখানি কথা না, একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে পাঁচ ঘন্টার মাঝে কতবার আমাদের মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটেছে। হয়তো পড়ার মাঝেই আমাদের ফেসবুকের নোটিফিকেশন চেক করছি, মেইল চেক করছি, কিংবা ইউটিউবে ঢুকে বসে আছি। এভাবে ২-৩ ঘণ্টা পড়ার পর ভাবছি আজ না জানি কত বেশি পড়ে ফেললাম। অথচ এই সময়টুকুতে যতোটুকু পড়া যেতো তা কিন্তু হয় নি।

কোন টপিক শিখতে কত সময় পড়লাম সেটা কখনোই মুখ্য বিষয় নয়, বরং টপিকটি আমি কয়বার ভালোভাবে বুঝে পড়েছি সেটাই মুখ্য বিষয়।

সুতরাং, পড়তে বসার সময় কোন টপিক মুখস্থ করার জন্য কোন নির্ধারিত সময় ফিক্সড না করে বরং টপিকটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত লাইন বাই লাইন কয়েকবার পড়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। একটা দাঁতভাঙ্গা অনুচ্ছেদ প্রথমবার পুরোটা পড়লে যতটুকু কঠিন মনে হবে দ্বিতীয়বার পড়লে তুলনামূলক কম কঠিন মনে হবে। সুতরাং যতবার পুনরায় পড়া হবে ততোটাই সহজ মনে হবে।

২। অনুচ্ছেদটিকে ভেঙ্গে ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত করে পয়েন্ট আউট করে ফেলা:

টপিকটি সম্পূর্ণ লাইন বাই লাইন পড়া হয়ে গেলে যে সকল বাক্যগুলো দুর্বোধ্য সেগুলো আন্ডারলাইন করে ফেলতে হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো বের করে নিয়ে আসতে হবে। একেকটি পয়েন্ট একটি শব্দ কিংবা একটি ছোট বাক্যের সমন্বয়ে তৈরি হতে পারে। পয়েন্ট আউট করাটা অবশ্যই বুদ্ধিমত্তার সাথে করতে হবে যেন একবার পড়ার সাথে সাথেই টপিকটির একটি বিশেষ অংশ মাথায় ঘোরা শুরু করে।

৩। মার্কার পেন ব্যবহার করা

কেউ কেউ ঝকঝকে বই ভালবাসেন আবার অনেকেই লাল নীল রঙ্গে বই ফুটিয়ে তোলেন। তবে আমাদের মধ্যে বেশিরভাগই মার্ক করে বা দাগিয়ে পড়তে ভালবাসেন। এটাও পড়া মনে রাখতে বেশ কার্যকর। গুরুত্বপূর্ণ অংশটুকু চিহ্নিত করার ফলে কোন শব্দ বা বাক্যের প্রতি আকর্ষণ ও আগ্রহ বেড়ে যায়। সেই সাথে ঐ অংশটুকুর উপর ব্রেইণের ভিজ্যুয়ালিটি ইফেক্টও বেড়ে যায় যা পড়াকে মনে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা করে।

৪। বেশি বেশি পড়া ও অনুশীলন করা

পড়া মুখস্ত করার জন্য শুধু পড়লেই হবে না, লিখতেও হবে বারবার। মানুষের ব্রেইন ক্ষণস্থায়ী স্মৃতি গুলোকে ঠিক তখনই দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিতে পরিণত করে যখন সেটা বার বার ইনপুট দেয়া হয়।

একই জিনিস বারবার ইনপুট দেওয়ার ফলে ব্রেইণ তার স্মৃতি গঠনের স্থানে একটি গাঠনিক পরিবর্তন আনে, যা দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি তৈরীতে সাহায্য করে। সুতরাং পড়া মনে রাখার অন্যতম উপায় হলো বেশি বেশি পড়া ও অনুশীলন করা।

৫। পড়ার জন্য সঠিক সময় নির্বাচন

প্রায় অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রীর ধারণা সারাদিন-সারারাত পড়লেই পড়া বেশি মনে থাকে। এটা নিতান্তই একটা ভুল ধারণা। এর কারণ হলো সবসময় আমাদের ব্রেইন একইভাবে কাজ করতে সক্ষম হয় না। তবে পড়ার জন্য একটা রুটিন বানানো উচিৎ ।

অবশেষে বলবো পড়াশনাটা আপনাকেই করতে হবে তাই আপনার সময় মতো পড়াশনার রুটিন বানিয়ে পড়াশনা শুরু করুন, সময় খুবই কম । যত তাড়াতাড়ি আপনি পড়াশনা শুরু করবেন তত এগিয়ে থাকবেন।

“মনে রাখবেন “সময় একটি শব্দ মাত্র যেটি চলে গেলে কখনই ফিরে আসে না ।

And Your Time Start NOW ! ”

…………………………………………………………………………………………………………..

CONTACT // WHATSD APP – 8479091027

message me : https://wa.me/918479091027

EMAIL. malymaity94@gmail.com

CHECK OUT THE PLATFORM:

TO VISIT MY BLOG LINK :https://mminstitution.blogspot.com/

👉 👉 Subscribe MY YouTube Channel :- http://www.youtube.com/c/MMINSTITUTIO…

👉 👉 Join 📚 MM INSTITUTION📚 FACEBOOK Group 2️⃣ :-

https://www.facebook.com/groups/20444…

👉👉join my telegram group: